কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

গাড়ি-বাড়ি, প্লট-ফ্ল্যাটে ঐকমত্য

মোস্তফা কামাল
গাড়ি-বাড়ি, প্লট-ফ্ল্যাটে ঐকমত্য

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। চব্বিশের জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও হয়নি। বলা হচ্ছে, এসবের ফয়সালা হবে আসন্ন জাতীয় সংসদে। তবে, জুলাই-আগস্টের শহীদ ও আহতদের রক্তে গড়া অন্তর্বর্তী সরকার আসন্ন সরকারের মন্ত্রীদের জন্য নতুন চকচকে- তকতকে গাড়ি কেনার বন্দোবস্ত করে ফেলেছে। তা কিন্তু আগামী সংসদ বা সরকারের জন্য ফেলে রাখেনি। এ নিয়ে কারও মাতবোল নেই। মোটামুটি বেশ চমৎকার সমন্বয় এবং ঐকমত্য!

এ বাস্তবতায়ই এগোচ্ছে দেশ এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের এক্সপ্রেস। যখন টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে যদ্দূর পারছে পণ্য কিনছে দৃশ্যত সামর্থ্যবানদের অনেকে। কাউকে মুখ খুলে বলতে পারছে না আর যে কুলাতে পারছে না। তুমুল আন্দোলনে সাত-আটজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু, বহু ভবনে আগুন, রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে লুটপাট ইন্দোনেশিয়ার গত সপ্তাহের রাজনীতির দৃশ্যপট। যে আন্দোলনের ইস্যু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আন্দোলনটি তেজ পায় সেখানকার পার্লামেন্ট সদস্যদের মাসিক ভাতা বাড়ানোর একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের অবস্থা ইন্দোনেশিয়ার পর্যায়ে যায়নি। একসময় শ্রীলঙ্কার অবস্থায়ও যায়নি। পরে কিন্তু শ্রীলঙ্কার দশাই হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রীদের রাস্তায় ধরে ধরে দিগম্বর করা, রাজপ্রাসাদে ঢুকে বিক্ষুব্ধ জনতার উল্লাসনৃত্যের সময় ঢাকায় ওবায়দুল কাদের-হাছান মাহমুদরা মুখ ভ্যাংচিয়ে খিচুনি দিয়ে বলেছিলেন, এটা বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশ এক নয়। কেউ যেন এখানে শ্রীলঙ্কার খোয়াব না দেখেন।

এখনকার বাস্তবতায় ইন্দোনেশিয়া আর বাংলাদেশও এক নয়। তবে, অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় কিছু মিল আছে। মূল্যস্ফীতির মাঝে সেখানকার সাধারণ মানুষের কঠিন জীবনযাত্রার মধ্যে এমপিদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে জনতা। এখানে মানুষের রাস্তায় নেমে রক্ত ঝরানো পরবর্তী দশার মধ্যেই ভবিষ্যৎ সরকারের মন্ত্রীদের জন্য আগাম শতকোটি টাকার গাড়ি কেনার খবর। বাংলাদেশে সংসদ সদস্য হওয়া একটা আচ্ছা ‘পেশা’। ফ্রি ট্যাক্সে গাড়ি-বাড়ি, প্লট-ফ্ল্যাটের বৈধতা অনেক বছরের। সামনেও যে এর হেরফের হচ্ছে না, সেই বার্তা পরিষ্কার। মোটামুটি এ বার্তাও পরিষ্কার যে, আগামী সরকারের মন্ত্রিসভাটি হতে পারে ৬০ সদস্যের। সম্ভাব্য ওই মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মিৎসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সেইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের জন্য কেনা হচ্ছে ১৯৫টি পাজেরোসহ ২২০টি গাড়ি। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। অথচ কৃচ্ছ্র, ব্যয় সংকোচনের কথা শোনানো হয়। গেল সরকার শুনিয়েছে, শোনাচ্ছে এ সরকারও।

চলতি অর্থবছরে যানবাহন কেনার ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচনের পদক্ষেপ নিতে একটি পরিপত্র জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। গাড়ি কারবারের এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে খেলাপ হলো পরিপত্রটি। গত ৮ জুলাই জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। তবে পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাধিকারভুক্ত কোনো সরকারি কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ি ১০ বছরের বেশি পুরোনো হওয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য হলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে গাড়ি কেনা যেতে পারে। সরকারের পরিবহন পুলের হিসাবমতে, গত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য কেনা যে গাড়িগুলো রয়েছে, সেগুলো ৯ বছরের পুরোনো। এ ক্ষেত্রেও পরিপত্রের শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ক্যামরি ও ল্যান্সার গাড়ি কেনা হয়। এর মধ্যে মন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ক্যামরি গাড়ি। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ল্যান্সার। বর্তমান উপদেষ্টারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ওই গাড়িগুলো ঢাকায় ব্যবহার করছেন। ঢাকার বাইরে গেলে বিভিন্ন দপ্তরের জিপ গাড়ি ব্যবহার করছেন। পতিত সরকারের মন্ত্রীগুলো পালিয়েছে। সরকারি গাড়িগুলো পালায়নি বা নিয়ে যেতে পারেনি। সেগুলো তো প্রায় নতুনই রয়েছে। সেগুলো নাকি ভবিষ্যতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের পক্ষে নির্বাচনী এলাকা সফর, উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনসহ অন্যান্য জরুরি কাজ করা কষ্টসাধ্য হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। প্রস্তাবে তেমনই উল্লেখ আছে।

আগামী মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা যে ৬০ হবে, তা কীভাবে জানল সরকার। পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, কী গাড়ি কিনবেন; সেই সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের? বা এমন সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের জন্য কেন জরুরি হয়ে গেল? এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি নিয়ে কত কথা হয়েছে। বাস্তবে কী নমুনা? এ প্রশ্নের জবাব কখনো মেলে না। গেল সরকারের পতনের মাস কয়েক আগে, সরকারিভাবে কৃচ্ছ্রসাধনের জনবান্ধব ফরমানের সময়ও ডিসি-ইউএনওদের জন্য দামি গাড়ি কেনা নিয়ে চলেছিল লুকোচুরি। একদিকে কৃচ্ছ্রের বাহারি আওয়াজ, আরেকদিকে সেই রাজ-আয়োজন। যখন দেশে চলছিল ডলার-সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি। রাজস্ব সংগ্রহ পরিস্থিতি করুণ। সরকার বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকির টাকা দিতে না পেরে ৮ থেকে ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ছেড়েছে, যাতে আপাতত নগদ টাকা দিতে না হয়। ডলার-সংকটে বিদেশ থেকে আনা গ্যাস-বিদ্যুতের দামও বকেয়া থাকছে। ওই অবস্থার মধ্যেই তখনকার জনপ্রশাসন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ডিসি-ইউএনওদের জন্য ২৬১টি নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব করেছিলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তখন বলেছিল, সংসদ নির্বাচন (২০২৪ সালের) সুষ্ঠুভাবে শেষ করার পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মাঠপর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনসেবা নিশ্চিত করার জন্য নতুন গাড়িগুলো দরকার। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার কারণে পরে নতুন যুক্তি নিয়ে আসেন জনপ্রশাসন সচিব। আর সেটি হচ্ছে ‘সরকারি কাজে গতিশীলতা বজায় রাখা’।

সেই গতিশীলতার ট্যাবলেট এখনো! বিশ্বের আর কোনো দেশে আমলা ও জনপ্রতিনিধিদের জন্য এমন রাজকীয় বন্দোবস্তের নজির নেই। ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, সুইডেন, ইতালি, জার্মান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত প্রভৃতি দেশে এমপিদের জন্য যাতায়াত ভাতা দেওয়া হয় সেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে। বাংলাদেশে এ নিয়ে কোনো রাখঢাক নেই। লাজ-শরম তো আরও পরের ব্যাপার। এমপি-মন্ত্রী হলেই বাড়ি-গাড়ি ফ্রি করে দেওয়া তার হক হয়ে যাচ্ছে। ফ্ল্যাট, প্লট, পারমিট, অফিস, ল্যাপটপ, গাড়ি, আসবাবপত্র, থোক বরাদ্দ, বেতন, ভাতা তাদের পাওনা। অতীতে দেখা গেছে, কিছু সংসদ সদস্য এ সুবিধার অপব্যবহার করেছেন। তারা তাদের আমদানি করা গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন এবং কম দামের অন্য গাড়ি কিনে ব্যবহার করেছেন। ১৯৮৭ সালে এইচএম এরশাদের শাসনামলে সংসদ সদস্যদের খুশি করতে এবং সরকারের প্রতি অনুগত রাখতে প্রথম এই শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের ২৪ মে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়। পরে ক্ষমতায় এসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের কত গালমন্দ করেছে, কিন্তু ওই সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ঐকমত্য থেকেছে। মাঝে একটু ছন্দপতন হয়। এই সুবিধার চরম অপব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিধানটি বাতিল করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এটি পুনরায় চালু করে। কেউ বাধা দেয়নি। দ্বিমতও করেনি। সংরক্ষিত কোটায় রাজউকের প্লট বাগানোতেও আচ্ছা ঐকমত্য। সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আমলা থেকে শুরু করে অফিস সহকারী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীও আছেন। শেখ পরিবারের কারও কারও নামে অনাথ কোটায় প্লট হাতানো তো হয়েছেই।

জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও জনসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্লটগুলো দেওয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্য ও রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাট আছে; এমন এমপিও রয়েছেন যারা বিশেষ কোটায় রাজউকের প্লট পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে রাজউক কর্মকর্তারা শুধু মন্ত্রণালয়ের হুকুম তামিল করেন। আর এই ফাঁকে নিজেরাও কিছু হাতান। এবার আগেভাগেই গাড়ির আয়োজন। হেলিকপ্টার দিলেও ঠেকাবে কে? ১৯৭৩ সালের ‘দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস)’ অ্যাক্টে বলা হয়েছে, মন্ত্রী (বর্তমান উপদেষ্টারা মন্ত্রী মর্যাদার), প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য সরকারি একটি কার পাবেন। যার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ জোগাবে সরকার। পরে সংশোধিত আইনে বলা হয়, জরুরি দাপ্তরিক কাজের জন্য কিংবা ঢাকার বাইরে নির্ধারিত কোনো সফরে গেলে অতিরিক্ত একটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রীদের জন্য শুধু কার কেনা যাবে। অন্য কোনো গাড়ি কিনতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে। আইন সংশোধন করলে কী, না করলেইবা কী—খাসলতের কোনো পরিবর্তন হয়ে থাকলেই না আইন। এ বিষয়ক বোঝাপড়া, মিলমিশ তথা ঐকমত্যই আসল কথা। জুলাই ছিল সংগ্রাম আর সাহসের দৃষ্টান্ত। এক বছরেই দিশা হারিয়ে সেই পুরোনো বন্দোবস্ত তথা খাসলতের জয়ের বার্তাই মিলছে। সেখানে কে কাকে ঠেকাবে?

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ৫৪তম জশনে জুলুস

নতুন রুপে শাহরুখ

সবসময় ক্লান্ত লাগে? সহজ সমাধান বিট কেভাস

নৌকাডুবিতে মায়ের মৃত্যু, মেয়ে নিখোঁজ

পাহাড়ের বুকে সৌদি আরবের ফাইভ স্টার হোটেল 

সারাদিন সতেজ থাকতে সকালে করুন এই সহজ ব্যায়াম

ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবরে পালালেন বর-কনে

বিপাকে শিল্পা-রাজ

রাজবাড়ীর ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে : এনসিপি

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১০

আজ সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী

১১

ডাকসু নির্বাচন, যা বলছেন প্রার্থীরা

১২

রাস্তায় এখন কিয়ার ইভি৫

১৩

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

১৪

কেমন থাকবে আজকের ঢাকার আবহাওয়া

১৫

৬ দিনেও ইমতিয়াজের জ্ঞান ফেরেনি, মামুনের অবস্থার উন্নতি

১৬

টিভিতে আজকের খেলা

১৭

সুদানে ভূমিধসে দুই শতাধিক শিশুর মৃত্যু

১৮

৬ সেপ্টেম্বর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৯

ইতিহাস, উৎপত্তি ও শরিয়তের আলোকে ঈদে মিলাদুন্নবী

২০
X