চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ৬ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। তার জ্ঞানের স্তর ৬/৭। মাঝে মাঝে নড়াচড়া করলেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে একই সংঘর্ষে আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর কালবেলাকে বলেন, মামুন কেবিনে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। তবে ইমতিয়াজের অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার সিটি স্ক্যান করা হলেও অস্ত্রোপচার করা হয়নি। কারণ এতে ঝুঁকি থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
গত রোববার দুপুরে সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ইমতিয়াজ ও মামুন মাথায় গুরুতর জখম পান। রাতেই অস্ত্রোপচারের পর তাদের লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বুধবার বিকেল মামুনকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলেও ইমতিয়াজের অবস্থা আগের মতোই।
এদিকে চবি প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, দায়িত্বহীনতা ও গর্হিত অপরাধের অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, প্রক্টরিয়াল বডির ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও উদাসীনতার কারণেই শিক্ষার্থীরা প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছে এবং দুজন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন দায় এড়াতে শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করছে। মামলায় মূল দোষীদের বাদ দিয়ে নিরপরাধদের হয়রানি করা হচ্ছে। হামলার পর আহতদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন করে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে তারা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—আহতদের মানসম্মত চিকিৎসা ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা, চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মামলার অসংগতি দূর করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন, সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সর্বশেষ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ও যোগ্য কর্তৃপক্ষ নিয়োগ। শিক্ষার্থীরা সতর্ক করে বলেন, দাবি মানা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
মন্তব্য করুন