মহসীন হাবিব
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৪, ০৩:৪৯ এএম
আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ০৭:০৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ভ্যাম্পায়ার বনাম মুক্তিযোদ্ধা ও কোটা

ভ্যাম্পায়ার বনাম মুক্তিযোদ্ধা ও কোটা

মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে, সড়ক অবরোধ করেছে। খুবই দুঃখজনক। কিন্তু কী তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, কেন তারা কোটা পছন্দ করছে না, তা নিয়ে একটু অন্দরে তাকাতে চেষ্টা করছি। সাবজেক্ট কঠিন ও স্পর্শকাতর।

যে কোনো দেশের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা গৌরবের। যারা দেশের জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, নিঃসন্দেহে তারা দেশের সবচেয়ে মূল্যবান মানুষ, সূর্যসন্তান। স্বাধীন সভ্য দেশের সরকারের একটি দায় থাকে তাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন ও প্রাপ্য সম্মান প্রদানের। এই তো ৬ জুন ফ্রান্সের নরমান্ডিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মিত্রবাহিনীর যোদ্ধাদের নিয়ে ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন করা হলো। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁসহ বহু নেতা উপস্থিত ছিলেন। এখনো সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন যোদ্ধা বেঁচে আছেন। একেকজনের বয়স ৯৮, ৯৯ এমনকি ১০০ বছর। তাদের পরম মমতায়, উচ্চকিত উচ্ছ্বাসে এবং গভীর শ্রদ্ধায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত করা হয়। আমরা ব্রিটিশ ওয়ার ভেটারান টমি মুরকে দেখেছি, যিনি ২০২১ সালে মৃত্যুর আগে ১০০ বছর বয়সে করোনার রোগীদের জন্য ফান্ড কালেকশনে নেমে ৫৩ মিলিয়ন ডলার তুলে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন রয়াল আর্মির ক্যাপ্টেন। শুধু সম্মান ও ভাতাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো দেশগুলোতে এ যোদ্ধাদের মৃত্যুর পর স্ত্রী ও সন্তানরা স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ নানা ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়ে থাকেন। অত্যন্ত স্বাভাবিক। তবে এই যোদ্ধাদের মধ্যে কোনো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা থাকার সুযোগ ছিল না। ১৮৩৬ সালের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন অ্যাক্ট অনুসারে, ব্রিটেনে ১৮৩৭ সালেই জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু ও বিয়ের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়। সেখানে প্রথম বছর মাত্র ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়নি। দ্বিতীয়ত জার্মানি বা জাপানের পক্ষে যুদ্ধ করে তারপর মিত্র শক্তি বিজয়ের পর ভোল পাল্টানোর কোনো সুযোগই কারও ছিল না। তবে জীবন বাঁচানোর জন্য জার্মানি-জাপান-ইতালির কেউ কেউ ভোল পাল্টাতে এবং পরিচিতি পাল্টাতে চেষ্টা করেছেন। পাল্টিয়ে রক্ষাও পেয়েছেন কেউ কেউ। তবে কোনো অর্থনৈতিক সুবিধা, চাকরির সুবিধার জন্য কেউ তার ভোল পাল্টেছে এযাবৎ শুনিনি, পড়িনি।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশে এখন কে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আর কে ছিলেন না, তা সঠিকভাবে বের করা এক মহাদুরূহ কাজ হয়ে গেছে। ভ্যাম্পায়ারের ছবি নিশ্চয়ই আমরা দেখেছি! ভ্যাম্পায়ার যতক্ষণ ভদ্রলোকের বেশ ধরে থাকে, ততক্ষণ তাকে চেনে কার সাধ্য? খোদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গত এপ্রিল মাসে বিবিসিকে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, অভিযুক্ত যারা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন, তাদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মামলা করলে হাজার হাজার মামলা করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয় চালাব, নাকি আদালতের বারান্দায় বারান্দায় দৌড়াব।’

তা ঠিক বলেছেন মন্ত্রী মহোদয়। কতজনের পেছনে দৌড়াবেন! এই ‘কতজন’ এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে মূল সমস্যা। শুধু কি তারা তালিকায় নাম লিখিয়েছেন? ১৯৭২ সালের দালাল আইনে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের আসামিও সরকারি গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নয়, লাল তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা! ঠেকানো কি এত সহজ? মুক্তিযুদ্ধের একটি বাস্তবতা কোথাও লেখা নেই। কিন্তু সবাই জানেন। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিল একটা বীরসুলভ গর্ব। তখন হাতে হাতে সার্টিফিকেট। নেতারা নিচে স্বাক্ষর দিয়ে সেই সার্টিফিকেট বান্ডিল পাঠিয়েছেন নিজেদের তরুণ-যুবক মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এবং আওয়ামী লীগের প্রান্তিক পর্যায়ের নেতাদের কাছে। তাদের তখন এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে, আমরা কি সার্টিফিকেটের জন্য দেশ স্বাধীন করেছি নাকি! সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচিতিকেই সার্টিফিকেট মনে করতেন। স্বাধীনতার পরপরই সনদ ছিল, কিন্তু কোনো ভাতা, কোটা বা সুবিধাদি ছিল না। কিন্তু তখন সার্টিফিকেট দেখানো বা কাছে রাখার প্রয়োজন হয়েছিল অ-মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের। কাজে লাগতে পারে, অথবা কেউ যদি এসে দালাল বলে অভিযোগ করে তাহলে ওই সার্টিফিকেট বাঁচিয়ে দেবে। আবার সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা কত তা নিয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যানও ছিল না। ভারত একটি তালিকা দিয়েছিল। কিন্তু যারা ভারত গিয়েছেন প্রশিক্ষণ নিতে, তারাই যে শুধু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তা তো নয়। সত্যিকারে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে রান্না করে খাইয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র নিজের বাড়িতে গোপনে লুকিয়ে রেখে সাহায্য করেছেন, তারাও তো মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সার্টিফিকেটধারী অধিকাংশের মধ্যে তারাও নেই। যদিও ১৯৭২ সালে এক আদেশে বলা হয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধা মানে এমন একজন ব্যক্তি যিনি মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত যে কোনো সংগঠিত দলের সদস্য হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। চট্টগ্রামের একজন মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ডা. মাহফুজুর রহমান ২০২০ সালে ১০-১২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে বসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে। তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৬৫০ জনের মধ্যে তারা মাত্র ১৫০ জনকে চিনতে পেরেছেন। চট্টগ্রাম মহানগরে ২৩টি সক্রিয় সংগঠন ছিল মুক্তিযুদ্ধে।

মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রথম রাজনৈতিকভাবে কলুষিত করা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে। তখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায়। এরপর জিয়ার কাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৪ সালে প্রথম তালিকা প্রণয়ন করে। তারপর থেকেই ভানুমতীর খেল দেখতে পাই আমরা। সরকার পরিবর্তন হয় আর মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় যোগ-বিয়োগ হয়। এ পর্যন্ত ছয়বার মুক্তিযুদ্ধের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যদি আরেকটু সরাসরি বলি, রাজনৈতিক মাঠ শক্ত করতে বিএনপি এবং ক্ষমতায় থাকতে এরশাদ এমন কিছু মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন যারা স্বাধীনতায় তো বিশ্বাস করেই না, বরং বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। সেই তালিকা শুদ্ধ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারও যে সঠিকভাবে করতে পেরেছে, তা মোটেই নয়।

যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও আমরা নানা দুর্বলতা দেখতে পাই। ২০১৭ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত এক নির্দেশে (স্মারক নং ২০১৭-১১০) বলা হয়, ‘কোনো কোনো মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি লাল মুক্তিবার্তা ও ভারতীয় তালিকাভুক্ত সকল মুক্তিযোদ্ধার সামনে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার না নিয়ে আলাদাভাবে ও পৃথকভাবে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা-২০১৬-এর যাচাই-বাছাই পদ্ধতির অনুচ্ছেদ-১০-এর বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। কিন্তু স্বাধীন দেশে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে আওয়ামী লীগেরই সমর্থক হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মুক্তিযুদ্ধের ভাতা, কোটা ও সুবিধাদি গ্রহণ করা অনেক মানুষকে এখন দেখা যায় সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি করতে দ্বিধাবোধ করেন না! সংখ্যাটা বিস্ময়করভবে হতাশাজনক। এ পরিস্থিতির জন্য কে বা কারা দায়ী সেই রাজনৈতিক তত্ত্বে গেলাম না। যারা কোটা নিয়ে আন্দোলন করছে, হয়তো বিগত দিনের সড়ক আন্দোলন ও অন্য সামাজিক আন্দোলনের মতো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি উসকানি দিতে চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু একটা কথা তো ঠিক, জাতির সরকারি চাকরি কাঠামোতে মেধাবী সন্তানদের কোনো বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধের কোটার নামে যদি অমেধাবী অথচ স্বাধীনতাবিরোধী প্রজন্মের কেউ প্রশাসনের স্পর্শকাতর চাকরিতে ঢুকে পড়ে, তা ঠেকানোর উপায় কী? সনদ নিয়ে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হওয়ার পর বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণ মিলেছে তাদের সনদ ভুয়া। সে ক্ষেত্রে ওইসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ফৌজদারি অপরাধের সাজা হয়নি। এটাও একটি দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।

আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে, পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু সেই আস্থা ও শ্রদ্ধা যদি ভ্যাম্পায়ারদের পায়ে সোপর্দ করতে হয়, তার চেয়ে বড় বেদনাদায়ক কিছু নেই। এ বিশালসংখ্যক ভ্যাম্পায়ারকে বেছে বের করার দায় সরকারের। আর সেটা করতে গেলে রাজনৈতিক বিবেচনা পরিহার করে নির্লিপ্ত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেই এখন অনেক স্বাধীনতাবিরোধী ঢুকে পড়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) রিপোর্টকে যেমন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনি জামুকাকেও নির্মোহ থেকে তাদের পবিত্র দায়িত্ব সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে জেলায় জেলায়, উপজেলায় দল-মত-নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষকারী সব বয়স্ক মানুষ নিয়ে খোলা মাঠে বসে চূড়ান্ত করে ফেলা হোক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা। তখন আর ভবিষ্যতেও কেউ এ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান ফিরে পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা।

লেখক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইতিহাসে এই দিনে কী ঘটেছিল?

অস্ট্রেলিয়ায় উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম টাইটানিয়াম হার্ট মানবদেহে প্রতিস্থাপন

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

শক্তিশালী পাসপোর্টে শীর্ষে সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশের অবস্থান কত?

২৭ জুলাই : নামাজের সময়সূচি

যে ভুলে মরতে পারে টবের গাছ

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে ২৪ বছর ধরে চাকরি, অতঃপর..

ঝিনাইদহে ২৪ বছর ধরে ক্রিকেট ব্যাট বানাচ্ছেন ৩ ভাই

জামালপুরে ১০ মামলায় আসামি ২৩০৫, গ্রেপ্তার ৩২

আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

১০

যাত্রী পারাপার কমেছে আখাউড়া স্থলবন্দরে

১১

সিলেটে ৭ চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭

১২

‘সাংবা‌দি‌কের ওপর হামলা নিঃস‌ন্দে‌হে ছাত্র‌দের কাজ নয়’

১৩

রাজশাহীতে সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার ১১৬৩

১৪

ছাত্রলীগের রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা নিয়ে সারজিসের ফেসবুক স্ট্যাটাস

১৫

তিন সমন্বয়ককে আটকের কারণ জানালেন ডিবিপ্রধান

১৬

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আল জাজিরাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার

১৭

পাকিস্তানের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস জয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

১৮

ময়মনসিংহে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা-মারধর

১৯

নাসিক কাউন্সিলর ইসরাফিল প্রধান গ্রেপ্তার

২০
X