ফুটবল মাঠে অধিনায়কের ভূমিকা খুব একটা চোখে পড়ে না। ক্রিকেট মাঠে যেমন অধিনায়ক অনেক সিদ্ধান্ত নেন। ফুটবলে সেটা ভিন্ন। কোচের ওপরই মাঠের বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত থাকে। তারপরও সবাইকে মাঠে খেলার স্পিডের সঙ্গে রাখার দায়িত্বটা পড়ে অধিনায়কের কাঁধেই। রেফারির সঙ্গেও নানা বিষয়ে আলাপ করতে হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ঠিকঠাক একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না। সেজন্যই হামজাকে অধিনায়ক দেখতে চান সাবেক গোলকিপার আমিনুল ইসলাম। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গতকাল দাবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে সাবেক এই অধিনায়ক ফুটবলের সাম্প্রতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেছেন।
হামজা বাংলাদেশ দলে খেললেও তার অভিজ্ঞতা ঢের। ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে লেস্টার সিটির মতো ক্লাবে খেলছেন তিনি। বেশ কয়েকবার অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেছেনও। সেজন্যই আমিনুল বলছেন, ‘হামজার মতো একজন ফুটবলার যদি অধিনায়কত্ব করে তাহলে বাংলাদেশ দল অনেকটাই নির্ভার হবে। তার নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাগুণ রয়েছে, তিনি লেস্টার সিটি ক্লাবে অধিনায়কত্ব করেছেন।’
বাংলাদেশ দলে এখন নিয়মিত অধিনায়ক তেমন নেই। শুরুর একাদশেই সুযোগ মেলে না জামালদের। তাইতো একেক ম্যাচে এককজনকে দেখা যায় আর্মব্যান্ড হাতে। আমিনুলের ভাষ্যমতে, ‘আমাদের যে বর্তমানে একেকজন একেক সময় দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা নিয়ে কনফিউশন বা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। হামজা অধিনায়ক হলে কেউ দ্বিমত হবে না এবং আরও উৎসাহিত হবে। ফেডারেশন, টিম ম্যানেজম্যান্ট কিংবা ভবিষ্যতে হামজাকে অধিনায়কত্ব দায়িত্ব দিলে বাংলাদেশের ফুটবলে ইতিবাচক দিক উন্মোচন হবে।’
বয়সভিত্তিক কিংবা জাতীয় দল শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ম্যাচ হারা বা জয়বঞ্চিত হওয়া বাংলাদেশের ফুটবলে স্বাভাবিক চিত্র। হংকংয়ের বিপক্ষে শেষ কয়েক সেকেন্ড আগে গোল হজম করায় ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ভঙ্গ হয়েছে। হংকংয়ের চার গোলই বাংলাদেশের ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষকের ভুলে হয়েছে। এ নিয়ে সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের পরামর্শ, ‘প্রতিটি জাতীয় দলে মনোবিদ থাকা প্রয়োজন। ম্যাচে যেন মানসিকভাবে চাপ নেওয়া না হয় এজন্য খেলোয়াড়দের মানসিক পরিবর্তন একজন মনোবিদ করতে পারেন। স্টেডিয়ামে অনেক দর্শক-সমর্থক থাকলেও খেলোয়াড়রা স্নায়ুচাপে ভুগবেন না। আমি খেলোয়াড়ি জীবনে মনোবিদের পরামর্শ নিয়েছি অনেকবার।’
তিন বছরের বেশি সময় স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বাংলাদেশ ফুটবল দলের হেড কোচ। হামজা-সামিতের মতো উঁচু মানের ফুটবলার আসার পরও সিঙ্গাপুর ও হংকং ম্যাচে বাংলাদেশ কোনো পয়েন্ট পায়নি। এজন্য ফুটবলসংশ্লিষ্টরা ক্যাবরেরাকে এককভাবে দায়ী করে পদত্যাগ দাবি করছেন। তবে ভিন্ন মত জানিয়েছেন আমিনুল, ‘দল হারলে অবশ্যই দায় কোচের ওপর বর্তায়। তবে এককভাবে শুধু কোচই দায়ী নয় হারের জন্য, ফুটবলারদের ছোটখাটো ভুলে ম্যাচে হার। এই কোচের সাফল্য ও পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট না হলে ফেডারেশন কোচকে পদত্যাগের জন্য বাধ্য করতে পারে, কোচ নিজেই পদত্যাগ করা উচিত যদি সে সাফল্য আনতে না পারে। কোচ বদল করে নতুন কোচ এলেই যে ফলাফল আসবে, এটারও নিশ্চয়তা নেই।’
মন্তব্য করুন