মো: আবুল কাশেম
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

যে কারণে এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ

সরকারের ব্যাখ্যা
যে কারণে এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রেস উইং জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত করে যে দুটি বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মূল লক্ষ্য হলো করনীতি প্রণয়ন ও কর ব্যবস্থাপনার কাজ আলাদা করা। দক্ষতা বাড়ানো, স্বার্থের সংঘাত হ্রাস ও দেশের কর ভিত্তি প্রসারিত করাও এর লক্ষ্য। বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বিলুপ্ত করার লক্ষ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এনবিআর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ; এটি এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন। বিশ্বে কর-জিডিপির গড় অনুপাত ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি মালয়েশিয়ায় এই অনুপাত ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে অন্তত ১০ শতাংশ কর-জিডিপির অনুপাত অর্জন করতেই হবে।

এর আগে গত সোমবার রাতে আলোচিত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অধ্যাদেশে শুধু রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদগুলো প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য রাখা হয়েছে। এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে এই অধ্যাদেশের বিরূপ প্রভাব পড়ার কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

প্রেস উইং জানায়, কর-জিডিপির অনুপাতের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর পুনর্গঠন জরুরি। একই সংস্থা করনীতি প্রণয়ন এবং সেই নীতির বাস্তবায়ন করবে—এ অবস্থান সাংঘর্ষিক। সেইসঙ্গে এটা ব্যবস্থা হিসেবে অদক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন, নীতি প্রণয়নে রাজস্ব আহরণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে; ন্যায়বিচার, প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা উপেক্ষা করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—একই প্রতিষ্ঠানের হাতে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকায় করনীতিতে পক্ষপাতিত্ব ও অনিয়ম হয়েছে। কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কার্যকর জবাবদিহি ছাড়াই কর ফাঁকিদাতাদের সঙ্গে গোপনে সমঝোতা করার সুযোগ পান। এটা জনস্বার্থের পরিপন্থি। অনেক সময় কর আদায়কারীরা ব্যক্তিস্বার্থে ফাঁকিদাতাদের সাহায্য করেন। এ ছাড়া কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের বাস্তুবসম্মত কাঠামো নেই। প্রণোদনা বা পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট সূচক নেই। কর কর্মকর্তারা নিজ কাজে কতটুকু নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন, তার মানদণ্ড নেই। নীতি ও প্রশাসনের দ্বৈত দায়িত্বের কারণে এনবিআরের মনোযোগ নির্দিষ্ট কোনো দিকে থাকে না। ফলে করজাল সম্প্রসারিত হচ্ছে না এবং রাজস্ব আহরিত হচ্ছে সম্ভাবনার তুলনায় অনেক কম। আইন প্রয়োগে অসামঞ্জস্য, বিনিয়োগ সহায়তার অভাব, সুশাসনের পদ্ধতিগত দুর্বলতা—এসব কারণে এনবিআরের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। আইনের শাসনও দুর্বল হয়েছে।

প্রেস উইং ব্যাখ্যায় আরও বলেছে, এনবিআর ভেঙে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন শুধু প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়; বরং ন্যায়ভিত্তিক ও দক্ষ করব্যবস্থা প্রণয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। শক্তিশালী নীতি নির্ধারণ ও স্বচ্ছ প্রশাসন দেশের নাগরিকদের স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট শুরু বৃহস্পতিবার 

শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে পালালেন প্রধান শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারী থালাপতি বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা

যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ যৌন অপরাধ করে ভারতীয়রা

স্ত্রীর জন্য দোয়া চাইলেন প্রযোজক ইকবাল

ইকসু গঠন ও নির্বাচনের গঠনতন্ত্র প্রণয়নে ১১ সদস্যের কমিটি

বনজ কুমারের মামলায় খালাস পেলেন ইলিয়াস

নদীতে চর ধসে আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

ওয়াই-ফাইয়ের রেডিয়েশন থেকেও হতে পারে ভয়াবহ রোগ!

আসনসীমা নিয়ে শুনানি শেষ, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ শিগগিরই 

১০

বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা

১১

মুহূর্তের ব্যবধানেই ভেস্তে গেল বন্দরে ডাকাতির পরিকল্পনা

১২

মেসিকে না পারলেও রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন টেইলর সুইফট

১৩

কিডনি রোগ হলে কী কী লক্ষণ হবে শরীরে

১৪

এবার ৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় সমন্বয়ক রিয়াদ রিমান্ডে 

১৫

কাগজপত্র জালিয়াতি করে অধ্যক্ষ হয়েছেন জাকির হোসেন

১৬

বিপিএলে ১ বলে ১৫ রান দেওয়া বোলার এবার দিলেন ১ বলে ২২ রান!

১৭

পেছাল রাকসু নির্বাচনের তারিখ, প্রতিবাদে শিবিরের বিক্ষোভ

১৮

রুমমেটকে ছুরিকাঘাত, ঘটনাটি সাজানো বললেন ভিপি প্রার্থী জালাল

১৯

ইরানে ফিরলেন আইএইএ পরিদর্শকরা, পরমাণু সহযোগিতা অনিশ্চিত

২০
X