ডা. মো. শরীফুল আলম
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বাস্থ্য পরামর্শ

এনজিওগ্রাম সম্পর্কে যা জানা প্রয়োজন

এনজিওগ্রাম সম্পর্কে যা জানা প্রয়োজন

এনজিওগ্রাম কী: এনজিওগ্রাম হলো একটি নিরীক্ষা পদ্ধতি। যেখানে এক্স-রে বা অন্যান্য চিত্রায়ণের মাধ্যমে রক্তনালির ভেতরে রক্তপ্রবাহের অবস্থা নির্ণয় করা হয়। এ পরীক্ষায় শরীরে একটি কন্ট্রাস্ট ডাই (বিশেষ রং) প্রবেশ করানো হয়, যা রক্তনালির অবস্থা স্পষ্ট করে তোলে। রক্তনালিতে ব্লকেজ বা সংকীর্ণতা থাকলে এটি শনাক্ত করা সহজ হয়।

এনজিওগ্রাম কেন করা হয়: এনজিওগ্রামের মাধ্যমে চিকিৎসক বিভিন্ন রোগ, যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজ, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ, রক্ত জমাট বাঁধা বা অ্যানিউরিজম শনাক্ত করতে পারেন। রক্তনালির ক্ষতি বা বাধা সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য এবং চিকিৎসার পরিকল্পনা করার জন্য এ পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরীক্ষার প্রস্তুতি: এনজিওগ্রামের আগে চিকিৎসক রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা এবং কিডনির কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারেন। পরীক্ষার দিন সকালে শুধু স্বচ্ছ তরল পান করতে হবে এবং অলংকার বা মূল্যবান জিনিসপত্র বাড়িতে রেখে আসতে হবে।

এনজিওগ্রামের সময় কী হয়: এনজিওগ্রামের সময় হাতের কবজি বা কুঁচকির ওপরে অবশ করা হয়। এরপর একটি সূক্ষ্ম টিউব বা ক্যাথেটার রক্তনালিতে প্রবেশ করানো হয়। এ টিউব দিয়ে কন্ট্রাস্ট ডাই প্রবাহিত করা হয়, যা এক্স-রে মনিটরে রক্ত প্রবাহের ছবি দেখায়। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য শরীর গরম অনুভব হতে পারে।

পরীক্ষা শেষে কী করবেন: পরীক্ষার পরে ক্যাথেটার সরিয়ে নেওয়া হয় এবং রক্তক্ষরণ এড়াতে ব্যান্ডেজ লাগানো হয়। হাতের কবজিতে কমপক্ষে চার ঘণ্টা এবং কুঁচকির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ব্যান্ডেজ চেপে রাখা হয়। এরপর বাড়ি ফিরে ভারি কাজ বা ওজন বহন থেকে দুদিন বিরত থাকতে হয়।

এনজিওগ্রামের ঝুঁকি: এনজিওগ্রামের ঝুঁকি খুব কম হলেও সামান্য কিছু জটিলতা হতে পারে, যেমন রক্তক্ষরণ, সংক্রমণ বা রক্তনালির আঘাত। কন্ট্রাস্ট ডাইয়ের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে তা জানিয়ে দেওয়া জরুরি। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে ডাই ব্যবহার করার কারণে কখনো কখনো ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হতে পারে।

ফল ও চিকিৎসা: পরীক্ষার পর চিকিৎসক ব্লকেজের মাত্রা নির্ধারণ করেন। ছোট ব্লকেজ থাকলে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন বা ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বড় ব্লকেজ থাকলে এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

এনজিওগ্রাম হলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা, যা রক্তনালির স্বাস্থ্য নির্ণয়ে কার্যকর। পরীক্ষাবিষয়ক কোনো প্রশ্ন থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।

ডা. মো. শরীফুল আলম

কনসালট্যান্ট, ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

চেম্বার: আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নকল সরবরাহ করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আটক

এইচএসসির তৃতীয় দিনে অনুপস্থিত ২৪৮৯১ জন 

ক্ষমতাকেন্দ্রিক নয়, সংস্কারের পক্ষে জোট চায় এবি পার্টি

ব্রিটিশদের নাকানিচুবানি দিতে ১০ বছর ধরে যে রণকৌশলে এগোচ্ছে ইরান

বাসযাত্রীর ব্যাগে মিলল বিপুল ইয়াবা, অতঃপর...

কুয়েট ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির জন্য ৬৮ অধ্যাপকের আবেদন

ইতিহাস গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর, কনটেইনার পরিবহনে রেকর্ড

৭০০ টাকার ব্রডব্যান্ড ৫০০ টাকায় দেওয়ার নির্দেশনা আইএসপিএবির

কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে রূপসা সেতুর টোল প্লাজা অবরোধ 

অসচ্ছল নারী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ঢাবি

১০

ক্ষোভের মুখে সরানো হলো বিএনপির অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এহসানকে

১১

নগর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সরাসরি পরিচালনা করবে ডিএনসিসি

১২

সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর নারকীয় হামলার প্রতিবাদ, থানায় মামলা

১৩

কুষ্টিয়ায় কাফনের কাপড় জড়িয়ে বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও

১৪

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যে জুলকারনাইনের প্রতিক্রিয়া

১৫

দুই দশক পর কারামুক্তি, সঙ্গে লাখ টাকা সঞ্চয় দুই নারীর

১৬

এবার ইরাকের বিমানবন্দরে রকেট হামলা

১৭

মায়ের কোল ফিরে পেল ৬০ হাজারে বিক্রি হওয়া শিশুটি

১৮

গুম কমিশনের প্রতিবেদনে নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র

১৯

ট্রাম্পকে বিদায় করতে আয়োজন করে নামছেন মাস্ক!

২০
X