যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ০৮:০৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর জেনারেল হাসপাতাল

এইডস আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বার সিজার নিয়ে দ্বন্দ্ব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইডসে আক্রান্ত এক প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে চিকিৎসক মহলে মতবিরোধ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের গাইনি বিভাগ অপারেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, অন্যদিকে অন্যান্য বিভাগ নিরাপত্তা ও থিয়েটার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে। বিষয়টি ঘিরে পুরো হাসপাতালেই শুরু হয়েছে উত্তপ্ত আলোচনা। হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইয়াসমিন আক্তার গত ২৮ মে সিজারের দিন নির্ধারণ করলেও তা সম্পন্ন হয়নি। আগামী রোববার আবার নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রসূতির এইচআইভি শনাক্ত হয় গর্ভকাল ছয় মাসে পৌঁছালে। বহির্বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা নেওয়ার পর সম্প্রতি তার সিজার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্র জানায়, রোগীকে সেবা দিতে তারা প্রস্তুত, তবে থিয়েটারের ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।

গাইনি বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘অপারেশন করতেই হবে, কিন্তু প্রশ্ন হলো—রক্ত ও তরল পদার্থ নিষ্কাশনের নিরাপদ ব্যবস্থা কীভাবে হবে? এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে শতভাগ প্রস্তুতি না থাকলে চিকিৎসক-নার্সদের ঝুঁকি থেকেই যায়।’

অন্যদিকে সার্জারি, অর্থোপেডিকস, ইএনটি, ডেন্টাল বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগীর অপারেশন করা হলে অন্তত তিন দিন অন্য রোগীদের অপারেশন করা সম্ভব হবে না। কারণ, এইডস আক্রান্ত রোগীর অপারেশন করা হলে থিয়েটার জীবাণুমুক্ত করতে তিন দিন লেগে যাবে।

একজন রোগীর জন্য তিন দিন অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রাখা অযৌক্তিক বলে বেশির ভাগ চিকিৎসক মনে করেন। এক চিকিৎসক বলেন, ‘এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০টি গাইনি ডেলিভারি, ৭-১০টি সার্জারি, ৬-৮টি অর্থোপেডিকস অপারেশন হয়। সড়ক দুর্ঘটনা বা ছুরিকাঘাত রোগীদের কী হবে? একজন রোগীর জন্য অন্য রোগীদের বিপদে ফেলা ঠিক হবে না।’ তাদের সুপারিশ, রোগীকে ঢাকার বিশেষায়িত এইচআইভি চিকিৎসাকেন্দ্র বা নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা হাসপাতালে রেফার করা হোক।

তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। গত বুধবার অপারেশনের কথা ছিল, কিন্তু কিছু জটিলতায় তা হয়নি।’

গাইনি বিভাগের ডা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘রোগী এলে তার চিকিৎসা করা আমাদের দায়িত্ব। তাকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আমরা অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুরক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে হাসপাতাল প্রশাসনকে।’

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, ‘এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে না করে বিশেষায়িত স্থানে করাই যুক্তিসংগত। সংক্রমণ ঠেকাতে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার।’ চিকিৎসক মহলের একাংশ রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর হলেও নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নভেম্বরে গণভোট চাওয়াদের কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে কিনা, প্রশ্ন রিজভীর

ফ্রান্সে ‘আশা এবং আমার সংগ্রাম’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

শাপলা প্রতীক না পাওয়ার প্রশ্নে যা বললেন সারজিস আলম

দুই গোলে এগিয়ে থেকেও জাপানের কাছে ব্রাজিলের হার

ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী

শিক্ষা উপদেষ্টাকে আইনি নোটিশ

বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা

সরিয়ে দেওয়া হলো শিক্ষার ডিজিকে 

ভিকারুননিসার ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন

গাজাকে নতুন করে নির্মাণ নিয়ে কী বলছেন ট্রাম্প

১০

সিজেএফবি বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন  / বেবী নাজনীন, পূর্ণিমা এবং কাজী জেসিন

১১

শিশুশ্রম নিরসনে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে

১২

টিকটক বানাতে গিয়ে প্রাণ গেল হৃদয়ের

১৩

সেপ্টেম্বরে সড়কে ঝড়ল ৫০২ প্রাণ

১৪

ধবলধোলাই এড়ানোর ম্যাচে বোলিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে চার পরিবর্তন

১৫

ট্রেনে টিকিট ছাড়া ভ্রমণ  / সাত দিনে জরিমানাসহ ১৭ লাখ টাকা আদায় 

১৬

ভারতে বিশাল বিনিয়োগের পথে গুগল

১৭

বিদেশি কর্মী নিয়োগে যে সুবিধা দেবে মালয়েশিয়া

১৮

টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

১৯

আরও ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

২০
X