বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ০৮:০৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর জেনারেল হাসপাতাল

এইডস আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বার সিজার নিয়ে দ্বন্দ্ব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইডসে আক্রান্ত এক প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে চিকিৎসক মহলে মতবিরোধ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের গাইনি বিভাগ অপারেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, অন্যদিকে অন্যান্য বিভাগ নিরাপত্তা ও থিয়েটার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে। বিষয়টি ঘিরে পুরো হাসপাতালেই শুরু হয়েছে উত্তপ্ত আলোচনা। হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইয়াসমিন আক্তার গত ২৮ মে সিজারের দিন নির্ধারণ করলেও তা সম্পন্ন হয়নি। আগামী রোববার আবার নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রসূতির এইচআইভি শনাক্ত হয় গর্ভকাল ছয় মাসে পৌঁছালে। বহির্বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা নেওয়ার পর সম্প্রতি তার সিজার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্র জানায়, রোগীকে সেবা দিতে তারা প্রস্তুত, তবে থিয়েটারের ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।

গাইনি বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘অপারেশন করতেই হবে, কিন্তু প্রশ্ন হলো—রক্ত ও তরল পদার্থ নিষ্কাশনের নিরাপদ ব্যবস্থা কীভাবে হবে? এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে শতভাগ প্রস্তুতি না থাকলে চিকিৎসক-নার্সদের ঝুঁকি থেকেই যায়।’

অন্যদিকে সার্জারি, অর্থোপেডিকস, ইএনটি, ডেন্টাল বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগীর অপারেশন করা হলে অন্তত তিন দিন অন্য রোগীদের অপারেশন করা সম্ভব হবে না। কারণ, এইডস আক্রান্ত রোগীর অপারেশন করা হলে থিয়েটার জীবাণুমুক্ত করতে তিন দিন লেগে যাবে।

একজন রোগীর জন্য তিন দিন অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রাখা অযৌক্তিক বলে বেশির ভাগ চিকিৎসক মনে করেন। এক চিকিৎসক বলেন, ‘এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০টি গাইনি ডেলিভারি, ৭-১০টি সার্জারি, ৬-৮টি অর্থোপেডিকস অপারেশন হয়। সড়ক দুর্ঘটনা বা ছুরিকাঘাত রোগীদের কী হবে? একজন রোগীর জন্য অন্য রোগীদের বিপদে ফেলা ঠিক হবে না।’ তাদের সুপারিশ, রোগীকে ঢাকার বিশেষায়িত এইচআইভি চিকিৎসাকেন্দ্র বা নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা হাসপাতালে রেফার করা হোক।

তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। গত বুধবার অপারেশনের কথা ছিল, কিন্তু কিছু জটিলতায় তা হয়নি।’

গাইনি বিভাগের ডা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘রোগী এলে তার চিকিৎসা করা আমাদের দায়িত্ব। তাকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আমরা অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুরক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে হাসপাতাল প্রশাসনকে।’

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, ‘এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে না করে বিশেষায়িত স্থানে করাই যুক্তিসংগত। সংক্রমণ ঠেকাতে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার।’ চিকিৎসক মহলের একাংশ রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর হলেও নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডিআরইউতে মঞ্চ ৭১–এর কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি

জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব অপরিহার্য: উপদেষ্টা

কনভেনশন হলে গেরিলা বৈঠকে গ্রেপ্তার শিমুল ৪ দিনের রিমান্ডে

শাহবাগে এসে ডিএমপি কমিশনারের ‘দুঃখ প্রকাশ’

ইনকিলাব সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাল ছাত্রশিবির

বিএনপি নেতাকে কোপাল যুবলীগ নেতা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী হাটহাজারী বিমানবন্দর

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ডাকসু নির্বাচন / ১৩২ শিক্ষার্থীকে খাওয়ালেন প্রার্থী, রিটার্নিং কর্মকর্তা বললেন আচরণবিধি লঙ্ঘন

সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে সিলেটে গণশুনানি

১০

একাধিক উপকারিতা কাঠবাদামের, যাদের জন্য ক্ষতিকর

১১

একই দিনে দুইবার পরিবর্তন, রাকসু নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ

১২

পারকি সৈকতের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ

১৩

জয়পুরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্ধর্ষ চুরি

১৪

হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের নামে প্রতারণা, সতর্ক থাকার নির্দেশ

১৫

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রচারণার ভিডিওতে থাকায় বিপাকে শেবাগ

১৬

ভারতের ছাড়া পানি থেকে বাঁচতেই বাঁধ উড়িয়ে দিল পাকিস্তান!

১৭

সিলেটে পানির জন্য হাহাকার, সড়ক অবরোধ

১৮

অপারেশনের পর জ্ঞান না ফেরায় রোগীর মৃত্যু

১৯

শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজারে ওরস বৃহস্পতিবার

২০
X