চিরায়ত প্রজ্ঞা ও নবীন জিজ্ঞাসার এক অসাধারণ মেলবন্ধন ঘটিয়ে ঢাকায় শুরু হয়েছে ‘ইমপসিবল কোয়েশ্চনস/জিজ্ঞাসার সিলসিলা’—এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী। রাজধানীর লালমাটিয়ায় দ্বীপ গ্যালারিতে এই প্রদর্শনী হচ্ছে। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য শুধু উত্তর খুঁজে বের করা নয়, বরং প্রশ্নকেই নতুন করে আবিষ্কার করা এবং এর বহুমাত্রিক দিকগুলো উন্মোচন করা—যেখানে ‘প্রশ্নই আলো, উত্তর নয়’।
গত ২১ জুন থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত, বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা। এই অনন্য আয়োজনের কেন্দ্রে রয়েছে ‘আমরা এমন এক পৃথিবীর সন্ধানে যাই, যেখানে প্রশ্নই আলো, উত্তর নয়’—এই গভীর দর্শন। শরীর, পরিচয়, ভাষা, স্মৃতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের গভীরে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নগুলোকে সামনে নিয়ে এসে এটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আলোচনা, দ্বন্দ্ব এবং নতুন বোধ তৈরি করছে। এটি একটি ‘সমষ্টিগত বৌদ্ধিক নিমগ্নতা’, যেখানে পাঠ, পারফরম্যান্স, লেখা এবং কথোপকথনের মাধ্যমে চিন্তার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে।
এই প্রদর্শনীর আলোচক ও পরিচালকের ভূমিকায় রয়েছেন পাঁচজন বিশিষ্ট শিল্পী। তারা হলেন ভিজ্যুয়াল শিল্পী এ. এসেন; শিল্পী ও গবেষক বজলুর রশীদ শাওন; শিল্প লেখক, শিল্পশিক্ষক, ধীমান সরকার; আ্যানিমেটর ও ভিজ্যুয়াল শিল্পী মং মং শে এবং চিত্রশিল্পী শেখ ফাইজুর রহমান।
এই প্রদর্শনী প্রচলিত জ্ঞানচর্চার গণ্ডি পেরিয়ে এক পরীক্ষামূলক জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র তৈরি করছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা শুধু দর্শক নন, বরং তারাও একটি সক্রিয় অংশ। এই প্ল্যাটফর্মে প্রশ্ন তোলা, চিন্তা ভাগ করা, দ্বিধায় থাকা এবং না-জানাকে আলিঙ্গন করার অনুশীলন করা হয়, যা ব্যক্তি ও সমষ্টির সংলাপে নতুন ধারণার জন্ম দেয়।
প্রায় দেড় বছর আগে এই প্রদর্শনীর ধারণা জন্ম নেয়, যখন সমমনা এই শিল্পীরা বর্তমান সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তাদের ভাবনাগুলোকে শিল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। শিল্পী শেখ ফাইজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের বর্তমান সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট আমাদের কাজের মূল বিষয়বস্তু। শিল্পী হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা থেকেই সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কাজ করা। প্রত্যেক শিল্পী নিজ নিজ ভাবনা থেকে কাজ করলেও সবার কাজগুলো একই সুতায় বাঁধা যায়।’
‘ইমপসিবল কোয়েশ্চনস’ প্রদর্শনীর প্রথম আর্টটক অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার, ৫ জুলাই। এই আলোচনার মাধ্যমে প্রদর্শনী নিয়ে গভীরতর ভাবনা ও আলোচনার সূচনা হবে।
মন্তব্য করুন