রাজধানীর পল্টনে প্রিতম-জামান টাওয়ারে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন কলাপসিবল গেট ও তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলাপসিবল গেট ও তালা খুলে কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংগঠনটির একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের ধস্তাধস্তি হয়। তবে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নুর দাবি করেছেন, তিনি ও তার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। আহত নুর ও রাশেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়ে সংগঠনের নেতা শাকিলুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, বিকেলে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে সভাপতি নুরুল হক নুরসহ অন্তত অর্ধশতাধিক
নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নুরকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে দুপুর ১২টায় এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নুরুল হক নুর বলেন, ‘অফিস স্টাফ ও উপস্থিত নেতাকর্মীদের মারধর করে কার্যালয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মনোনয়ন বিক্রির টাকা-পয়সাসহ সব ডকুমেন্ট নিয়ে আমাদের কার্যালয়ে নতুন কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্যালয়ের সামনে বহিরাগত ২০-২৫ জন মাস্তানকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। যারা ঢুকছে তাদের মারধর করছে। এর আগে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে মিটার নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে একের পর এক অমানবিক আচরণ ও অত্যাচার করে যাচ্ছেন মিয়া মশিউজ্জামান। তার খুঁটির জোর কোথায় নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন?’ এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে কার্যালয়ের সামনে লাইভ করেন নুর। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাসের সময় যেন আমাদের দেওয়া হয়। আপনারা পুলিশ-প্রশাসন এ দখলদারের পক্ষে না থেকে চুক্তি অনুযায়ী আমাদের কার্যালয়ে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিন। কিন্তু পুলিশ বলছে, এখানে ওপরের নির্দেশ। গণঅধিকার পরিষদ এখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা যেন না করতে পারে। এখানে বাধা দিলে রক্ত ঝরবে, লাশ পড়বে জানিয়ে নুর বলেন, আপনারা এখান থেকে চলে যান, আমাদের কার্যালয়ে আমাদের ঢুকতে দিন। এক ঘণ্টা তিন মিনিটের লাইভে দেখা যায়, পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন নুর ও তার অনুসারীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন—আমাদের কার্যালয় ফিরিয়ে দাও, দিতে হবে। ভিপি নুরের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে নুরের পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি ছিঁড়ে যায়। পুলিশকে কার্যালয় থেকে সরে যেতে বলেন নুরের অনুসারীরা। এ সময় এক পুলিশ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, এখানে মারামারি হচ্ছে না। ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে। ২৯ মিনিট পর নুর ও তার অনুসারীদের নেমে আসতে দেখা যায়। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহ উদ্দিন মিয়া বলেন, অফিস তালাবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও তারা জোর করে, ভেঙে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। পরে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে কোনো সংঘর্ষ যাতে না হয়, তাদের সরিয়ে দিই।
মন্তব্য করুন