শফিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫২ এএম
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:১৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

খালেদা জিয়া সার্বিক খবর রাখছেন

খালেদা জিয়া সার্বিক খবর রাখছেন

পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার খুব বেশি উন্নতি না হলেও স্থিতিশীল রয়েছে। হাসপাতালে থেকেই তিনি দেশের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। দোয়া-দরুদ ও নামাজ পড়ছেন। পছন্দের বই ও বিভিন্ন পত্রিকা পড়েন এবং টেলিভিশনে খবর দেখেন। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন না। চিকিৎসক দলের সদস্য ও পরিবারের সদস্য ছাড়া কারও সঙ্গে হাসপাতালে তিনি দেখা করেন না। তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শে ডায়েট

মেন্যুর খাবার খান বলে জানা গেছে। ২০২২ সালের ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

প্রায় ৭৯ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে কারাবন্দির পর তার শারীরিক অসুস্থতা ও অসুখের জটিলতা বেশ কয়েকবার বেড়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, কিডনি, লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বহুবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার শারীরিক জটিলতা বেড়েছে। এজন্য তাকে অনতিবিলম্বে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দিতে হবে। এ বিষয়ে চিকিৎসক, বিএনপি ও পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অনেকবার দাবি জানানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের প্রকৃত অবস্থা না জানার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষও রয়েছেন ধোঁয়াশায়। তার অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়লেই দেশে-বিদেশে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠানও করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং অবিলম্বে মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দোয়া মাহফিল, লিফলেট বিতরণ এবং মহানগর ও জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা করে বিএনপি। তাকে মুক্তি দিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার, অ্যামনেস্টিসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন সময়ে আহ্বান জানিয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি মেলেনি। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে বিশেষ অস্ত্রোপচার (টিপস) করা হয়। ২০২২ সালের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে রিং পরানো হয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, এখন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের জটিলতাগুলো কমে এলেও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হচ্ছে, বাসায় সার্বক্ষণিক এ ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সে কারণে তাকে হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে। তার স্বাস্থ্যের আরও কিছু উন্নতি হলে তাকে বাসায় নেওয়া না নেওয়ার প্রশ্নে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

এক প্রশ্নে ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকলেও দেশের সার্বিক খোঁজখবর রাখেন। নিয়মিত পত্রিকা পড়েন ও টেলিভিশন দেখেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সরকার তার বিরুদ্ধে সাজা দিয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি রেখেছে। তিনি ভীষণ অসুস্থ। কখনো ভালো আবার কখনো খারাপ। এটা খুবই উদ্বেগের। তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে আহ্বান জানান। বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের আবেগ-অনুভূতির জায়গা। তার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও তিনি আশঙ্কামুক্ত নন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় আদালত সাজা দিলে ওই দিনই খালেদা জিয়া কারাবন্দি হন। করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে চিকিৎসার ছয় মাসের সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর থেকে তার পরিবারের আবেদনে দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে। তিনি গুলশানের ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন। চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা তাকে দেশের বাইরে নিতে চাইলেও সে অনুমতি মেলেনি।

খালেদা জিয়া ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন।

খালেদা জিয়ার দুই ছেলে। বড় ছেলে তারেক রহমান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মারা যান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সহজ জয়ে লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত বার্সার

স্বাস্থ্য পরামর্শ / ডায়াবেটিসজনিত পায়ের ক্ষত ও পিআরপি চিকিৎসা

শ্রমিকদল নেতা হত্যায় গ্রেপ্তার আরেক শ্রমিক দল নেতা

বিএনপির এক নিভৃত নেতৃত্ব আতিকুর রহমান রুমন

১৪ মে-কে জবির ‘কালো দিবস’ ঘোষণা, নতুন কর্মসূচি গণ-অনশন

জামালপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা—সভাপতি সুমিল, সম্পাদক শফিক

মানবিক করিডোর ও বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত দেশবাসী মেনে নেবে না : জমিয়ত

বকেয়া বেতনসহ ৩ দফা দাবি মউশিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

আগামীকাল জুম্মার পর জবি শিক্ষার্থীদের গণ-অনশন

জ্বালানির দাম কমায় ফ্লাইটে ভাড়া কমানোর আশ্বাস

১০

সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বরিশালে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি

১১

একসঙ্গে সমাবর্তন নিলেন একই পরিবারের পাঁচজন

১২

আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট, ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৩

৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২৩ মে

১৪

আমার মাধ্যমে কোনো অন্যায় পলে আটকায় দিও : ববি উপাচার্য

১৫

কবরস্থান কমিটি নিয়ে যুবদল-শ্রমিক দল নেতার দ্বন্দ্ব, অতঃপর...

১৬

মোহাম্মদপুরে একই পরিবারের ৭ জনকে কুপিয়ে জখম

১৭

গরু নিয়ে যাওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বহিষ্কার

১৮

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

১৯

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের অবমাননাকর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ হেফাজতে ইসলামের

২০
X