কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩১ এএম
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সস্তা সিগারেটের দিকে ঝুঁকছে গরিব ধূমপায়ীরা

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ার সিগারেট শিল্প বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। দেশে এখন তামাকের অতিরিক্ত মজুত তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা, বাড়তে থাকা বেকার ও গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে ভীষণ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অনেক ধূমপায়ী বাধ্য হচ্ছে সস্তা কিংবা অবৈধ সিগারেটের দিকে ঝুঁকতে। এতে করে বড় বড় সিগারেট কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং পুরো শিল্প খাত এক ধরনের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে ধূমপায়ীর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি। সরকারি জরিপ অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ৭ কোটি মানুষ ধূমপান করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ১০-১৮ বছরের কিশোর। ২০২৪ সালে সরকার সিগারেট কেনার ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করলেও এর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখা যায়নি।

এ পরিস্থিতিতে দেশের দুই প্রধান কোম্পানি ফিলিপ মরিস মালিকানাধীন এইচএম সাম্পোয়েরনা ও দেশীয় ব্র্যান্ড গুদাং গারাম বেশ লোকসানের মুখে পড়েছে। গুদাং গারামের মুনাফা গত এক বছরে ৮০ শতাংশের বেশি কমে গেছে, আর সাম্পোয়েরনার বিক্রিও ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। শেয়ারের দামও গত তিন বছরে টানা পড়তির দিকে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় আঘাত হেনেছে।

অন্যদিকে, সরকারের আয়ও কমে গেছে। সিগারেট শুল্ক থেকে যে রাজস্ব দীর্ঘদিন ধরে বাড়ছিল, ২০২৩ সালে তা ১৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার কমেছে। কারণ, আইনি সিগারেটের দাম এতটাই বেশি যে, মানুষ অবৈধ সিগারেট কিনছে বেশি। বর্তমানে একটি সিগারেটের দামের অর্ধেকেরও বেশি শুধু কর হিসেবে কেটে নেওয়া হয়।

এমন অবস্থায় নীতিনির্ধারকরা দ্বিধায় পড়েছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুল্ক বাড়ানোর কৌশল আসলে উল্টো ফল দিচ্ছে। এতে ধূমপান কমছে না, বরং অবৈধ বাজার আরও বাড়ছে। এর পাশাপাশি কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়ে কর্মী ছাঁটাই করছে। তাতে আবার বেকারত্ব ও ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের সমস্যা আরও গভীর হচ্ছে। বর্তমানে এই শিল্পে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ কাজ করছে, ফলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে, বড় কোম্পানিগুলোতে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। যদিও গুদাং গারাম দাবি করছে, তারা ছাঁটাই নয়, আগাম অবসরের সুযোগ দিচ্ছে। তবুও তাদের মোট কর্মী সংখ্যা গত এক বছরে আড়াই হাজারের মতো কমে গেছে।

সংকট নিরসনে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আগামী বছর সিগারেটের শুল্ক আর বাড়ানো হবে না। বরং অবৈধ সিগারেট বাজার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এতে হয়তো ২০২৬ সাল থেকে শিল্প খাত কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তবে এই পুনরুদ্ধার নির্ভর করবে সরকার কতটা কার্যকরভাবে অবৈধ বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং কোম্পানিগুলো কীভাবে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তার ওপর।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চ্যাটজিপিতে নতুন ফিচার চালু, পাবেন যেসব সুবিধা

পুরস্কারপ্রাপ্ত পাঁচ সাংবাদিককে বিএআরএফের সংবর্ধনা

বিএনপির সঙ্গ ছেড়ে এককভাবে ভোট করার ঘোষণা কর্নেল অলির

নুর ও রাশেদের জন্য যে ২ আসন ছাড়ল বিএনপি

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী গ্রেপ্তার

অনেকের ভিসা প্রত্যাখ্যান, কারণ জানাল যুক্তরাষ্ট্র

নাক-ঠোঁট নিয়ে কটু মন্তব্যে ভেঙে পড়েছিলেন মাধুরী

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারেক রহমান ছাড়া কেউ বক্তব্য দেবেন না : সালাহউদ্দিন

প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ায় স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছিলেন ঐশী!

হঠাৎ পেশি কাঁপছে? কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি

১০

শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল / ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ট্রেজারার অপসারণ এবং চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

১১

আগামী ৩ দিন কী করবেন তারেক রহমান, জানালেন সালাহউদ্দিন

১২

শরিকদের জন্য কয়েকটি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

১৩

বিপিএল / সিলেট-চট্টগ্রাম পর্ব থেকে ছিটকে গেলেন বাংলাদেশের তারকা স্পিনার

১৪

বিএনপিতে যোগ দিলেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান

১৫

‘কান্তারা’র দৈবকে ‘ভূত’ বলে তোপের মুখে রণবীর, পাশে দাঁড়ালেন গুলশান

১৬

সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে নারীর মৃত্যু

১৭

তারেক রহমান দেশে ফিরে আগে মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন : সালাহউদ্দিন

১৮

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

১৯

ওসমান হাদির ঘটনায় হাইকমিশনারকে যে বার্তা দিল ভারত

২০
X