ডিম আমদানি করে সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, করপোরেট সিন্ডিকেট ভাঙতে মুরগির বাচ্চা এবং পোলট্রি ফিডের দাম কমানোর ব্যবস্থা করতে পারলে ডিম ও মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি।
সুমন হাওলাদার বলেন, ডিম আমদানি নয় রপ্তানি করুন। প্রান্তিক খামারিদের ধরে রাখুন। কারণ বাজারের ৮০ শতাংশের চাহিদা প্রান্তিক খামারিরা পূরণ করে থাকে। ডিম আমদানি করলে সিন্ডিকেট ভাঙবে না। বাজার তদারকিতে ডিমের সিন্ডিকেট মুরগির বাচ্চার ওপর ভর করেছে। ডিম আমদানি না করে, ডিম রপ্তানি করতে পারি। আমাদের সেই পরিমাণ উৎপাদন রয়েছে। ডিম ও মুরগি উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস বিপরীতে উৎপাদন রয়েছে ৫ কোটি। পোলট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত আছে ৫০-৬০ লাখ উদ্যোক্তার কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থান রক্ষার তাগিদে ডিম আমদানি বন্ধ করতে হবে এবং প্রান্তিক খামারিদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। পোলট্রি ফিড এবং মুরগির বাচ্চার দাম কমিয়ে, উৎপাদন খরচ কমিয়ে মূল্য কমানো সম্ভব।
বিপিএ বলছে, ভারতের বাজারে ডিম, মুরগির দাম কম। কারণ ভারতে ৫০ কেজির ১ বস্তা ব্রয়লার ফিডের মূল্য বাংলা টাকায় ২ হাজার ৭০০ টাকা, ১ বস্তা লেয়ার ফিডের মূল্য ১ হাজার ৮৭৫ টাকা, ১টি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার মূল্য ২৮ টাকা, ১টি লেয়ার বাচ্চার মূল্য ২৫-৩০ টাকা। তাই একটি ডিমের উৎপাদন খরচ বাংলা টাকায় ৫-৬ টাকা। তাদের বাজারে একটি ডিম বিক্রি হয় ৭ টাকা থেকে সাড়ে ৭ টাকা। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১১০-১২০ টাকা বিক্রি করে। ১৫০-১৬০ টাকায় তাদের উৎপাদন খরচ কম, তাই তারা কম দামে বিক্রি করেও লাভ করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে ১ বস্তা ব্রয়লার ফিডের দাম ৩ হাজার ৫০০ টাকা, ৫০ কেজি ১ বস্তা লেয়ার ফিডের মূল্য ২ হাজার ৯০০ টাকা, ১টি ব্রয়লার বাচ্চার মূল্য ৫০-৬০ টাকা, একটি লেয়ার বাচ্চার মূল্য ৭০-৭৫ টাকা। বাংলাদেশে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা থেকে ১১ টাকা। বাচ্চার দাম ৩৫ টাকা ধরে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬৭ টাকা। বাচ্চার দাম বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তাই ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ ডাবল। সরকারকে তদারকি করে সমস্যা সমাধান ও ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুমন হাওলাদার আরও বলেন, আমদানি করে ডিম ও মুরগির দাম কমাতে চাইলে দেশীয় শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। আমদানিনির্ভর হলে পরবর্তী সময়ে ঠিক বেশি দামে কিনে খেতে হবে। টাকা থাকলেও ডিম ও মুরগি পাওয়া যাবে না। তাই দেশীয় উৎপাদনকে কীভাবে ধরে রাখা যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রান্তিক খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে উৎপাদনে ফিরেয়ে আনতে হবে, তাদের বাজার প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে হবে।