শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তির বাতিল আদেশ প্রত্যাহার এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায় মোতাবেক কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ পালন না করায় সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা, ডিএনসিসির প্রশাসক ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পদত্যাগসহ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের ভুক্তভোগী জনতার উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে আলহাজ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম বলেন, আমরা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দীর্ঘদিন ধরে উল্লিখিত বিষয় দুটির সমাধান চেয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়াসহ দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো সমাধান পাইনি। এমতাবস্থায় আমাদের বিষয় দুটির সমাধানের জন্য আবারও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তিনি জানান, আমাদের দুটি দাবি বাস্তবায়নে আগামী ২৫ মে বিকেল ৩টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এই কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতাসহ সবাইকে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
আব্দুর রহিম বলেন, বাংলাদেশের বস্তিবাসী সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবনের মানোন্নয়নের জন্য আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে আজ অবধি লড়াই-সংগ্রাম করে আসছি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ঢাকার ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পটি একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এই প্রকল্পটি শতভাগ বিনিয়োগে আমি ও আমাদের প্রতিষ্ঠান এনএসপিডিএল ২০১০ সাল পর্যন্ত চালিয়ে আসি। প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে বিগত আওয়ামী সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লোকজন নানাবিধ অপকর্ম, লুটপাট ও আমাদের দেশ ছাড়া করে প্রকল্প অবৈধভাবে দখল করে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার বিজয় সরণিস্থ কলমিলতা বাজার এর প্রকৃত মালিক আমার বাবা শহীদ আব্দুল কাদের। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমার বাবা শহীদ হওয়ার সুযোগে ১৯৭২ সালে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অবৈধভাবে জবরদখল করে। এই জবরদখলকে মুক্ত করার জন্য আমরা শহীদ পরিবার হিসেবে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর দ্বারে দ্বারে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে বিচার বিভাগের কাছে ১৯৭৫ সালে একটি রিট মামলা দায়ের করি। পরে দীর্ঘদিন আইনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। যদিও প্রতিটি আদালত আমাদের এই সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ দুই মাসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও সরকারকে প্রদান করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, এই ৫৩ বছরের যাবতীয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমাদের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকার অধিক। কিন্তু আজ অবধি সেই ক্ষতিপূরণ আমরা পাইনি।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট নূরতাজ আরা ঐশী, বসতিনেত্রী জেসমিন, নুরজাহান বেগম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন