রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজামণ্ডপের দানবাক্স লুটের চেষ্টার সময় একজনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরের এ ঘটনায় পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, লুঙ্গি ও আকাশি শার্ট পরা এবং গলায় গামছা পরা এক ব্যক্তি মণ্ডপের সামনে যান। সেখানে গিয়ে প্রথমে দানবাক্স হাতে নিয়ে আছাড় দিয়ে ফেলে দেওয়ার পর এতে লাথি মারতে দেখা যায় তাকে। একপর্যায়ে বাক্সটি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই ব্যক্তি। তখন তাকে ধরে ফেলেন মন্দিরের লোকজন। জিজ্ঞাসাবাদে নাম-পরিচয় ও উদ্দেশ্য নিয়ে অসংলগ্ন কথা বললে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। পুলিশের জেরায় তাকে পাগল বলে ধারণা করা হয়। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনা জানতে চকবাজার থানার ওসি কাজী সাইদুজ্জামান শাহীনকে কয়েক দফা ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে এসএমএস দিলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিরণ্ময় বাড়ৈর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ বিষয়ে কিছু জানেন না। পুলিশের চকবাজার জোনের এডিসি শফিকুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনিও বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত দেব কালবেলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এক ব্যক্তি মন্দিরে ঢুকে দানবাক্স ছুড়ে ফেলে লাথি মারতে থাকে। এ সময় তাকে মন্দিরের নিরাপত্তাকর্মীরা ধরে চকবাজার থানা পুলিশের কাছে দেয়। পুলিশ পরে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পাগল বলে ছেড়ে দেয়। রাতে কমিটির পক্ষ থেকে চকবাজার থানায় জিডি করার কথা জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাবেক সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, জাতীয় মন্দিরে এ ধরনের ঘটনা আশা করা যায় না। তিনি পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, পুলিশ হামলাকারীকে ধরে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হয়ত অনেক তথ্য বেরিয়ে আসত। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন বাংলাদেশ উদ্যাপন পরষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতারা।
ঘটনা শুনে পুলিশ কমিশনার মন্দিরে হামলাকারীকে ছেড়ে দেওয়ায় দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করার নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার।
এ সময় পুলিশের লালবাগ জোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন