দুই কোটি টাকার চাঁদা না পেয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র।
শনিবার (৫ জুলাই) চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বরাবর অভিযোগ করে একটি চিঠি দিয়েছেন রিয়াজুল জান্নাত নামের এক নারী।
রিয়াজুল জান্নাত জামায়াতে ইসলামীর বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি নওশেদ জামালের স্ত্রী।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা। পুলিশ বলছে, নওশেদ জাতীয় শ্রমিক লীগ মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
চিঠিতে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেন, নওশেদ জামাল চট্টগ্রামে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রুকন, পাশাপাশি বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। কিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নেজাম (নিজাম) উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার স্বামীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়।
রিয়াজুল জান্নাত চিঠিতে একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করেন। ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নিজাম উদ্দিনকে একটি কক্ষে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই শোনেন, পুলিশ পারে না এমন কিছু নাই...। আমি বলতে চাচ্ছি, আপনার যার প্রতি ক্ষোভ, যাদের প্রতি ক্ষোভ, ওই তিনজনকে হলেই তো হইছে... আপনি যদি চান ওই তিনজনকে... করে দিতে পারবে... দেশে থাকতে হবে, এটা মাথায় রাইখেন।’
এদিকে ফেসবুকে পোস্ট করে নিজাম উদ্দিন দাবি করেছেন তিনি চাঁদা চাননি। এ ছাড়া ওই নারীর উল্লিখিত ভিডিওটি পুরোনো। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভিডিওটি পতেঙ্গা থানা এলাকার, তা-ও চার থেকে পাঁচ মাস আগের। অথচ ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুই দিন আগে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায়। ভিডিওতে কোথাও ‘টাকা দাবির’ তথ্য না থাকার পরও এটিকে ‘চাঁদাবাজির’ তকমার ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করছে একটি চক্র।’
নিজাম উদ্দিন কালবেলাকে জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমি ওসিকে বলেছি, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হলে নওশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, আর না হয় ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা এখন দাবি করছেন, আমি তাকে ধরিয়ে দিয়েছি।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম কালবেলাকে জানান, এ ধরনের অভিযোগ সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানায় কিংবা উপকমিশনার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা পুলিশ কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেবেন।
মন্তব্য করুন