

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাব্য প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির উদ্যোগে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হালিশহর নয়াবাজার মোড় থেকে থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বড়পুল এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী মশাল হাতে মিছিলে অংশ নেন। এ সময় ‘বন্দর বিদেশিদের হাতে দেব না’ স্লোগানে পুরো এলাকা মুখর হয়ে ওঠে।
স্কপ নেতারা বলেন, এনসিটি (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) ও লালদিয়ারচর ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া জাতীয় স্বার্থবিরোধী। তাদের দাবি, চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বিদেশি হাতে গেলে তা দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আগে থেকেই এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা স্কপ জানায়, সরকার যদি জনগণের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দেয়, তবে কর্মসূচি আরও কঠোর করা হবে।
মিছিলে বন্দর কর্মচারীরাও যোগ দেন এবং বিদেশি অপারেটরের কাছে বন্দর হস্তান্তরের বিরোধিতা করে স্লোগান দেন। তাদের দাবি, দেশি জনবল ও দক্ষতার ওপর ভরসা না করে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়া অযৌক্তিক।
সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম সফরে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘বন্দর উন্নয়ন বিষয়ে সরকার বিভিন্ন নীতি নিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ মানেই মালিকানা হস্তান্তর নয়।’
তবে শ্রমিক নেতারা বলছেন, মাঠের বাস্তবতায় বিদেশি অপারেটরকে এনসিটি ও লালদিয়ারচর ইজারা দেওয়ার নীতিগত উদ্যোগ চলছে। এই প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। বিদেশিদের হাতে এনসিটি ও লালদিয়ারচর তুলে দিলে এখানে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়বে।’
মিছিলে অংশ নেওয়া শ্রমিক জহির আহমেদ বলেন, ‘দেশি শ্রমিকের দক্ষতায় চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার ব্যস্ততম বন্দরে পরিণত হয়েছে। এখন বিদেশিদের হাতে অপারেশন দিলে হাজারো শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।’
মিছিল শেষে নেতারা পুনরায় সরকারের কাছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মন্তব্য করুন