আমাদের প্রাণ ও প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে নদনদী। নদীর উপকারিতা অনন্য। তপ্ত রৌদ্রে একটু প্রশান্তির আশায় মুন্সীগঞ্জবাসী ছুটে আসেন ধলেশ্বরীর পাড়ে। দীর্ঘ বছর যাবৎ প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদীর পাড়টি ছিল স্থানীয় অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে। সর্বশেষ গত তিন দিন আগে বিআইডব্লিউটিএ নদীর সীমানা নির্ধারণ করে প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। এতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ স্থায়ী আবাসনও ভাঙা পড়ে। তবে হাটলক্ষ্মীগঞ্জ সীমানাধীন ধলেশ্বরীর পাড়ে আবার দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন শনিবার (২৯ জন) রাতে সেই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ধলেশ্বরীর পাড়ঘেঁষে পুনরায় তৈরি করা হচ্ছে একটি জ্বালানি তেলের দোকান। পূর্বে এই দোকানটি টিন-কাঠের থাকলেও এখন তা তৈরি করা হচ্ছে ইট-সিমেন্টের প্রাচীর দিয়ে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দোকান মালিকপক্ষ জানান তারা লিজ নিয়েছে বিআইডব্লিউটএর কাছ থেকে।
দর্শনার্থী পলাশ দাস বলেন, নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করাতে জায়গাটা অনেক সুন্দর লাগছে। খোলামেলা পরিবেশ, আসলেই আমাদের প্রাণের জায়গা এই ধলেশ্বরী নদীর পাড়। তবে আজ দেখেছি এখানে একটি দোকান তৈরি করা হচ্ছে। এই দোকানটা যেন একটি বিষফোড়া। চারদিকে খোলামেলা মাঝখানে একটা স্থাপনা, এটা মানা যায় না। অবিলম্বে কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ-ই-হাসান তুহিন বলেন, দুই দিন যেতে না যেতেই আবার ধলেশ্বরীর পাড় দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এটা আসলেই দুঃখজনক। আজ এই দোকানটা তৈরি হলে, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দোকানগুলোও তৈরি হয়ে যাবে। এর মানে আবারও সেই দখল।
তিনি আরও বলেন, বেশকিছু দিন আগে মেঘনা নদীর পাড়েও বিআইডব্লিউটিএ অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদ করে। তারপর যেই অবস্থা সেই। কয়েক দিন যেতে না যেতেই আবার প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্বের চিত্রে ফিরে আসে।
বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা তাদের কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি। তাদের কী আছে, কতটুকু আছে এবং নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ওনারা আমাদের নির্দেশনা না মেনে কাজ করলে তা অবৈধ। আগামীকাল আমাদের কর্মকর্তারা ভিজিট করবে। তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জ্বালানি তেল বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. শাহাজালাল মিয়ার শ্যালক মো. আফসু বলেন, আমার দুলাভাই অন্ততপক্ষে ১০ বছর আগে এই জায়গা বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। কয়েক দিন আগে উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্য দোকান ভাঙার সময় এই তেলের দোকানটিও ভেঙে যায়। তাই আবার নতুন করে দোকানটি নির্মাণ করা হচ্ছে।