লিয়াকত মাসুদ, কসবা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:২৪ এএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:৪৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

চায়না জালের অবাধ ব্যবহার, হুমকির মুখে মৎস্যসম্পদ

জলাশয়ে পেতে রাখা হয়েছে মাছ ধরার ফাঁদ (চায়না জাল)। ছবি : কালবেলা
জলাশয়ে পেতে রাখা হয়েছে মাছ ধরার ফাঁদ (চায়না জাল)। ছবি : কালবেলা

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় চায়না জালের অবাধ ব্যবহারে হুমকির মুখে মৎস্যসম্পদ। চায়না ম্যাজিক জালে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির ডিমওয়ালা মাছসহ জলজপ্রাণী ধরা পড়ছে এই জালে। ফলে মাছশূন্য হয়ে পড়ছে কসবার নদী-খাল-বিল। ম্যাজিক জালের ব্যবহার বন্ধ না হলে এই অঞ্চলের দেশি মাছ বিলপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চায়না জাল সাধারণ এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ও ৬০ থেকে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ক্ষুদ্র ফাঁসবিশিষ্ট ধনুক আকৃতির হয়। লোহার রড় ও রডের রিং দিয়ে খোপ আকারের বাক্স তৈরি করে চারপাশ সূক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেরাও করে তৈরি করা হয়। ফলে চায়না জালের দুই দিক থেকে মাছ ঢুকতে পারে।

আরও পড়ুন : নদে বাঁধ দিয়ে খরা জালে মাছ শিকার

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, চায়নার আবিষ্কৃত একধরনের বিশেষ ফাঁদ। এটি প্রায় ২০ ফুট থেকে শুরু করে ৮০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। দেখতে ছোট ছোট খোপের মতো। এই জাল খাল বিল জলাশয়ে বাশেঁর খুঁটির সঙ্গে জালের দুই মাথা বেধে পেতে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পর তোলে ছোট বড় সব ধরনের মাছ এই জালে আটকা পড়ে এলাকায় এই জাল ব্যবহারের কারণে মুক্ত জলাশয়ের মাছ শেষের পথে। এলাকার মানুষ উপজেলা বিভিন্ন বাজার থেকে এই জাল উন্মুক্তভাবে ক্রয় করছেন।

স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেছেন. প্রতিটি ম্যাজিক জালের দাম তিন থেকে চার হাজার টাকা হলেও প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এতে লাভ থাকায় জালের টাকা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে জেলেরা এই জালে মাছ ধরায় ঝুঁকছেন বেশি।

এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সকাল ও বিকেল দুবেলা ছোট ছোট পোনা মাছ নিয়ে বাজারে আসছেন স্থানীয় জেলেরা। মৎস্য অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি বা অভিযান পরিচালনা না করলে চায়না জাল ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার মৎস্য ও জলজপ্রাণী নির্মূল হয়ে যাবে। এই বিষয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

আরও পড়ুন : নিষিদ্ধ জালে অবাধে নিধন ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ

উপজেলা মূলগ্রাম ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের দিপংকর নামের এক জেলে জানান, চায়না জালে সব ধরনের মাছ ছেকে উঠে। দাম কম হওয়ায় স্থানীয় মৎস্য শিকারিরা এই জালে মাছ ধরে। ফলে আমরা যারা চিরাচরিত কৌশল ভেসাল ও ঝাকি জাল দিয়ে মাছ ধরতাম, এখন আমাদের জীবিকার নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

কসবা উপজেলার তিতাস নদীতে দেখা গেছে, ছোট ছোট ২০ থেকে ৩০ জন জেলে জাল পাতছে। এই সময়ে জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় সব মাছ, এমনকি বিলে থাকা জলজপ্রাণীও এই জালে উঠে আসছে।

উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, ইতোমধ্যে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের জেলে ও মৎস্য শিকারিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করার মাধ্যমে এই সব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার না কারার জন্য সচেতন করছি। পরবর্তীতে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারের পর লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ স্কোয়াডের বাইরে সালাহ

জাপার কেন্দ্রীয় নেতা এবার হাতপাখার প্রার্থী, সমালোচনার ঝড়

মায়ের স্বর্ণের হার বন্ধুদের ভাগ করে দিল ছেলে

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হলেন ৩১ কর্মকর্তা

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের দপ্তরে ইসরায়েলের অভিযান

মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ৫ গরু, সর্বস্বান্ত খামারি

৪ নারী পেলেন বেগম রোকেয়া পদক

সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড, কেন এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ

আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটার, জায়গা পাননি সাকিব

জামাল ভূঁইয়ার কাছ থেকে আইফোন উপহার নিলেন বরিশালের সানি বেপারী

১০

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কার বেশি, জানা গেল জরিপে

১১

আলোনসোর ভবিষ্যৎ নিয়ে জরুরি বৈঠকে রিয়াল

১২

স্বামীকে ত্যাগ নয় ,কাছে টেনে নিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী

১৩

বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ৫০০ একর আমন ক্ষেত 

১৪

ঢাকা কলেজ ও আইডিয়ালের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

১৫

অ্যাশেজের শেষ তিন টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন অজি তারকা

১৬

আলুবীজ উৎপাদনে বিপ্লব, টিস্যু কালচারে বছরে ২৫ লাখ প্লান্টলেট

১৭

ভোট দিতে প্রবাসী নিবন্ধন ২ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়াল

১৮

জাপান / এক সপ্তাহের ‘শক্তিশালী ভূমিকম্পের’ সতর্কতা জারি

১৯

হেনস্তার শিকার ভারতীয় সংগীতশিল্পী

২০
X