বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘স্বামী মারা না গিয়ে আমি মারা গেলে ভালো হতো’

তিন সন্তান নিয়ে আমির হোসেনের স্ত্রী আন্নি আক্তার। ছবি : কালবেলা
তিন সন্তান নিয়ে আমির হোসেনের স্ত্রী আন্নি আক্তার। ছবি : কালবেলা

জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরছিলেন অটোরিকশাচালক আমির হোসেন তালুকদার। বাসায় ফেরার পথেই দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হন। কর্মক্ষম স্বামীকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী আন্নি আক্তার।

সন্তানদের নিয়ে মানববেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। তাই সন্তানদের ভরণপোষণ ও লালনপালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন আন্নি আক্তার।

জানা গেছে, তালতলী উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের আমির হোসেন তালুকদার ছোটবেলায় কাজের সন্ধানে ঢাকায় যান। ঢাকার রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার আরমান (৬), আরিয়ান (৪) ও আমেনা (১) নামের ৩টি সন্তান রয়েছে।

গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ আদায় করতে রামপুরা মোল্লা টাওয়ার সংলগ্ন মসজিদে যান। নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরছিল আমির। ওই সময় সংঘর্ষ চলাকালে ৩টি গুলি এসে তার শরীরে বিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান।

স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ি তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের মৌপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে।

নিহত আমির হোসেনের স্ত্রী আন্নি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার আর কিছুই রইল না। স্বামী মারা না গিয়ে আমি মারা গেলে অনেক ভালো হতো। এখন আমার তিন সন্তানকে কে ভরণপোষণ দেবে। আমি কীভাবে তিন সন্তানকে লালনপালন করব তা ভেবে পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সন্তানদের ভরণপোষণ ও লালনপালনের জন্য আর্থিক সহায়তার চাই।

নিহতের চাচা জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, গত ১৯ জুলাই ঢাকায় আন্দোলন চলাকালে আমার ভাতিজা আমির হোসেন তালুকদার গুলিতে নিহত হয়। আমির হোসেন স্ত্রী ও তিনটি শিশু সন্তান রেখে গেছেন। ওই শিশু সন্তানদের ভরণপোষণের কেউ রইল না। আমিরের স্ত্রী আন্নি আক্তার তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবি জানাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমির হোসেন দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় থাকতেন। তিনি অত্যন্ত গরিব মানুষ। ঢাকা শহরের রিকশা চালিয়ে সংসার চালাত। তিনি শুক্রবার জুমার নামাজের পর গুলিতে মারা যান। ৩টি বাচ্চা আছে তার। আমি সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাই, তাদের যদি কোনো আর্থিক সহযোগিতা সরকারের কাছে থাকে সেটা যেন তারা পায়।

তালতলী থানার ওসি মো. শহীদুল ইসলাম খাঁন বলেন, নিহত আমির হোসেন তালুকদারের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা জেনেছি। তার নিহতের ঘটনাস্থল ঢাকায়। ওই স্থানের পুলিশই ব্যবস্থা নেবেন।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা কালবেলাকে বলেন, নিহত আমির হোসেনের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। তার পরিারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত

টাকা বাঁচাতে লেভানদোভস্কিকে গোল করতে মানা করেছিল বার্সা!

মুক্তিযুদ্ধকে বিএনপির মতো অন্য কোনো দল ধারণ করে না: শামা ওবায়েদ

মুশফিকের শততম টেস্টে হামজার বিশেষ বার্তা

ভারতকে হারিয়ে ফিফা থেকে সুখবর পেল বাংলাদেশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের কবলে বিচারক, খোয়ালেন মোবাইল-চশমা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ছোট কাজে বড় অনিয়ম

লালদিয়া-পানগাঁও টার্মিনাল / ১০ বছরের করমুক্ত সুবিধা পাবে দুই বিদেশি কোম্পানি

রামপুরায় বাসে আগুন

যুবদলের পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

১০

আসামি ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনিতে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার

১১

এবার ‘রাজসাক্ষী’ হয়ে আরেক পুলিশ সদস্যের জবানবন্দি

১২

দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ আ.লীগের ৮ নেতাকর্মী কারাগারে

১৩

নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাবিতে নৌবহর কর্মসূচি

১৪

সময় টিভির চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলামের পদত্যাগ

১৫

ইতালি নেওয়ার লোভ দেখিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে তিন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা

১৬

জানা গেল বিপিএল নিলামের নতুন তারিখ

১৭

রোজা শুরু হতে আর কত দিন বাকি? জেনে নিন

১৮

ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতি / বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ঐক্য পরিষদ

১৯

আবারও বিপিএল নিলাম নিয়ে অনিশ্চয়তা

২০
X