শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ১০:১৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ল্যাম্পপোস্টে চলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা

ল্যাম্পপোস্টের নিচে চলছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। ছবি : কালবেলা
ল্যাম্পপোস্টের নিচে চলছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। ছবি : কালবেলা

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনিয়া মদিনাতুল উলুম হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসা। যেখানে সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে রাতের পড়াশোনা। এর মধ্যে অন্তত দুবার হয় লোডশেডিং। টিনের চাল ও বেড়ার মাদ্রাসায় বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে থাকা দায় শতাধিক শিক্ষার্থীর।

অপরদিকে ক্লাস বন্ধ করে দিলে ক্ষতি হয় পড়াশোনার। বিকল্প আলোর ব্যবস্থা না থাকায় প্রচণ্ড গরমে শতাধিক শিক্ষার্থীর রাতের পড়াশোনা চলে মাদ্রাসার মাঠে স্থাপন করা ল্যাম্পপোস্টের নিচে।

শিক্ষার্থীদের গোল করে বসিয়ে সেখানেই চলে তালিম। শিক্ষকদের দাবি, রাস্তার পাশে মাদ্রাসা হওয়ায় বিদ্যুৎ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চারা চলে যায় মাঠের পাশে প্রধান সড়কে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনার ব্যঘাত ঘটে। তাই বাধ্য হয়েই সপ্তাহের প্রায় অধিকাংশ দিনই কম আলোতেই চালাতে হয় রাতের ক্লাস।

মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হুমায়ুন বলেন, অনেক মানুষ এক সঙ্গে থাকলে এমনিতেই গরম বেশি লাগে। এ গরমে প্রতিদিন রাতে ২/৩ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। আমাদের মুখস্থ বিদ্যার পড়াশোনা। তাই ক্লাস বন্ধ থাকলে আমাদের সমস্যা হয়। নিয়ম করে পড়তে না বসলে পড়া মুখস্থ হয় না। তাই বিদ্যুৎ না থাকলেও পড়তে হয়। আমাদের যদি আইপিএস থাকত তাহলে বাইরে বসে পড়তে হতো না। আমাদের একটা আইপিএস হলে ভালো হয়।

মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, বাচ্চারা যেন ছোটাছুটি করতে না পারে এর জন্য আমরা চারপাশে শিক্ষকরা বসে থাকি। এভাবে পড়াশোনা করানো খুব কষ্টদায়ক। ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যায়। ফ্যান চলে না, লাইট জ্বলে না। তাই তীব্র গরমে বাধ্য হয়েই ছেলেদের খোলা মাঠে পাঠদান করাচ্ছি। আমাদের বিদ্যুতের যদি বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা নির্বিঘ্নে পাঠদান করাতে পারব। ফ্যান ও লাইট যেন বিদ্যুৎবিহীন চলে এই ব্যবস্থা দরকার।

মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মুফতি মো. গোলাম রব্বানী বলেন, আমাদের মাদ্রাসায় প্রায় তিনশ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থী আবাসিক। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘরে বিকল্প কোনো লাইট ও ফ্যানের ব্যবস্থা নেই। তাই ছাত্রদের পড়াশোনার স্বার্থে আমরা মাঠের মাঝখানে ল্যাম্প পোস্টের আলোয় পাঠদান করাচ্ছি। সমাজের বিত্তবান ও সরকার যদি সুনজর দেয় তাহলে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবে।

কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ খান নুন বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা শুনেছি। আমার পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব তাদের জন্য সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হবে।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, বাচ্চাদের ল্যাম্পপোস্টের নিচে পড়াশোনা আসলে দুঃখজনক। মাদ্রাসা প্রধানকে শ্রেণিকক্ষগুলোর জন্য আইপিএসের প্রয়োজনীয় ক্যাপাসিটি উল্লেখসহ একটি আবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যাচাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ

হরিণের মাংসসহ আটক ৮

যে বিলাসবহুল নেশায় বছরে ৬০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেন হলান্ড

পাটুরিয়ায় ফেরিঘাটে ভাঙন, ৪ নম্বর ঘাটও ঝুঁকিতে

দুই কারণে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম

ত্বকের যত্নে ম্যাজিকের মতো কাজ করে যে ৫ ফল

আপনি কি জানেন, কেন তালার নীচে ছোট্ট ছিদ্র থাকে?

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পর জর্জিনাকে কত টাকার উপহার দিয়েছেন রোনালদো?

ফ্রিজে রাখা কাটা পেঁয়াজ কি খাওয়া উচিত, যা বলছেন বিশেষজ্ঞ

লুট হওয়া পাথর বালু ও মাটি দিয়ে আড়ালের চেষ্টা

১০

যেসব দেশে থাকার জন্য টাকা পাওয়া যায়

১১

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম এখন কত

১২

ডিএমপিতে অনলাইন জিডি করবেন যেভাবে

১৩

৪ জনের মরদেহ উদ্ধার / ‘আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো’ লেখা চিরকুটে আরও যা ছিল

১৪

ঝিনাইদহ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন 

১৫

পানিবন্দি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খিচুড়ি পৌঁছে দিলেন ইউএনও

১৬

১০৭ বছর বয়সেও চশমা ছাড়া কোরআন পড়েন নুর জাহান

১৭

প্রেম, স্মৃতি আর বিদায়ের গল্পে লিসা-কেনতারো

১৮

গোপালগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী পালিত

১৯

আমিরের সঙ্গে দিব্যর স্বপ্নময় মুহূর্ত

২০
X