শিক্ষার্থীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (৪ আগষ্ট) সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা। পরে সড়কে অগ্নিসংযোগ ও অবরোধ করায় প্রায় ৮ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া জেলার সরকারি ও বেসরকারি ১৫টির অধিক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা।
এর আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-চট্টগ্রাম সিলেট মহাসড়ক অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে ভোাগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রীরা।
ঢাকায় অফিসে যাওয়া মহাসড়কে একটি প্রাইভেট কোম্পানির কর্মচারী বিপুল বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে মহাসড়কে এসে আটকে পড়েছি। গাড়ি চলাচল বন্ধ যার কারণে পা হেটেই যেতে হচ্ছে। এই হয়রানি আর ভোগান্তির শেষ কোথায়।
সাইনবোর্ড এলাকায় আরেক পথচারী আলম চাঁন বলেন, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় হাসপাতালে যাব। কিন্তু গাড়ি বন্ধের কারণে যেতে পারছি না। ভেঙ্গে ভেঙ্গে পায়ে হেটে ও রিকশা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ভেতরে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। এগুলোর সমাধান হওয়া দরকার। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের দাবি নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমাদের ভাই বোনদের হত্যার বিচার করতে হবে। সব শ্রেণি পেশার মানুষকে আমাদের এই আন্দোলনে আসার আহ্বান জানাই। আমাদের এই আন্দোলনে বহিরাগতদের আগমন চাই না। ভাঙচুর ও অরাজগতা আমাদের কাম্য নয়। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। আমাদের দাবি না পূরন হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দনশীল বলেন, ছাত্রদের নাম দিয়ে জামায়াত-বিএনপি জেলা পরিষদ ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ওরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভাঙচুর করে। গ্যারেজে থাকা অফিসের ২টি গাড়ি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ লুটপাট করে নিয়ে যায়। কার্যালয়ের ভেতর থাকা স্টাফদের মারধর করা হয়। তল্লা আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুর লুটপাট করা হয়। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, আমাদের কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় ডিসি থিম পার্কে তাণ্ডব চালানো হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। যারা এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ডিসি থিম পার্কসহ বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় পুলিশের অন্তত ৬ জন সদস্য আহত হয়েছেন। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।