বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মর্জিনা খাতুনকে (৪০) হত্যার পর ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখার অভিযোগে ছেলে রাব্বি ইসলাম ও ছেলের বউ নূপুরকে গ্রেপ্তার করেছে ব্যার। শুক্রবার রাতে র্যাব-১২ সদস্যরা তাদের ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে র্যাব ওই দুই আসামিকে ধুনট থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
এর আগে নিহত মর্জিনার মা রওশন আরা খাতুনকে (৫৮) গ্রেপ্তার করে ২৩ জুলাই কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ধুনট পৌরসভার মেয়র এ জি এম বাদশাহ বাদী হয়ে ২২ জুলাই রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মর্জিনা খাতুন চান্দারপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ ও রওশন আরা দম্পতির মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে মর্জিনা খাতুনের সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর একমাত্র ছেলে রাব্বি ইসলামকে নিয়ে মর্জিনা তার মা রওশন আরার বাড়িতে ওঠেন। রাব্বির বিয়ের পর পরিবারের সদস্য সংখ্যা হয় চার। চারজনের ওই সংসারে সহায়সম্বল বলতে ইছামতী নদীর চরে মাথা গোঁজার জন্য সামান্য বসতভিটা রয়েছে। জীবিকার তাগিদে নানা কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা। কয়েক মাস ধরে মর্জিনা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পক্ষে আর কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গত ৩০ জুন রাতে মর্জিনাকে তারা গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এরপর লাশ গুম করতে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখেন। পরে ওই বসতঘরের দরজায় তালা দিয়ে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। ২১ জুলাই সন্ধ্যার দিকে ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন পৌরসভার মেয়র এ জি এম বাদশাহকে জানান। মেয়র থানা-পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। ঘটনা নিয়ে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সন্দেহ হলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ২২ জুলাই দুপুরে মর্জিনার মা রওশন আরাকে ঢাকা থেকে ডেকে আনা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে পুলিশ ঘরের মেঝে খুঁড়ে মর্জিনার লাশ উদ্ধার করে। রওশন আরা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং হত্যার বর্ণনা দেন। এ ঘটনায় পৌর মেয়র এ জি এম বাদশাহ বাদী হয়ে রওশন আরা, রাব্বি ও নূপুরকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, এর আগে মামলার প্রধান আসামি রওশন আরাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি রাব্বি ও নূপুরকে বগুড়া র্যাব-১২ গ্রেপ্তার থানায় সোপর্দ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন