মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৩:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বামীর প্রেরণায় বিসিএস ক্যাডার লাবনী

আয়েশা আক্তার লাবনী।
আয়েশা আক্তার লাবনী।

নিজের পরিবার ছেড়ে শ্বশুড়বাড়ি। নতুন সংসার সামলানোর এক চ্যালেঞ্জ। সেই কঠিন জায়গা থেকেই স্বামীর প্রবল ইচ্ছে, অগাধ বিশ্বাস আর ভালোবাসায় সাফল্যে মোড়ানো এখন লাবনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২-১৩ সেশনের আয়েশা আক্তার লাবনী ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার উত্তর শিকিরচর গ্রামের সন্তান লাবনী। বাবা আবদুল খালেক মিজি ও মাতা তাসলিমা বেগম। পরিবারের দুই ভাইবোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ তিনি। ছোট ভাই তাইজুল ইসলাম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে অধ্যয়নরত।

লাবনী পড়ালেখা শুরু করেন নারায়ণগঞ্জের পাগলার আহসান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। পড়াশোনার ফলাফল ছিল তার সবসময় চোখ ধাঁধানো। ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ এবং মেধাতালিকায় বোর্ডের অধীনে বৃত্তি পান। এরপর ভর্তি হন দনিয়া কলেজে। একাদশ শ্রেণিতেও ভালো ফলাফলের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। ২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে একই বোর্ডের অধীনে বৃত্তি পান লাবনী। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে ১ম শ্রেণিতে ২০১৬ সালে স্নাতক ও ২০১৭ সাথে ডিগ্রি অর্জন করে কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রাখেন।

এর আগে ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের পূর্ব লালপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের জ্যেষ্ঠ্য ছেলে মো. ফকরুজ্জামান আরিফের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন আয়েশা আক্তার লাবনী। আরিফ দীর্ঘ সময় ধরে দেশের সুনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। হাজারও ব্যস্ততায় সবসময় স্ত্রীকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন তিনি।

আর সেই অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে লাবনী বলেন, যে কোনো সফলতায় একজন বন্ধু পাশে থাকা দরকার। সে দিক থেকে আমি খুব ভাগ্যবান। কারণ আমার স্বামী আগে আমার বন্ধু তারপর স্বামী। তার সবসময় বিশ্বাস ছিল একাডেমিক সফলতার পাশাপাশি বিসিএসে ভালো করতে পারব। তার এই বিশ্বাস আমার আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিত। আমার আজকের এই সফলতায় তার অবদান অনস্বীকার্য।

স্বপ্নজয়ের গল্পে লাবনী বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের মানুষের জন্য কিছুর করার। সেই আগ্রহকে পুঁজি করেই এগিয়ে চলি। ২০১১ সালে আমার বিয়ে হওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে আমার পথ চলা। ২০১৩ সালে আমার বড় মেয়ের জন্ম হয় এবং ২০২০ সালে আমার ছোট মেয়ের জন্মের পর তাদের সঙ্গে নিয়েই আমার বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিসিএস যাত্রা চালিয়ে যাই। জীবনের কঠিন এই সময়ে পুরোটা সময়জুড়ে স্বামীর সমর্থন পেয়েছি আর তার প্রবল আগ্রহ এবং ইচ্ছা আমার চলার পথকে আরও গতিময় করে তোলে। বিশেষভাবে আমার শ্বশুরবাড়ি ও আমার পরিবারের লোকজনের প্রতিও আমি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা সার্বক্ষণিক আমাকে সহায়তা করেছেন এবং মহান আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে আমি সফলতা লাভ করেছি।

ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা নিয়ে আয়েশা আক্তার লাবনী বলেন, আমি ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে সরকার কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করব। সবসময় জনগণের কল্যাণে কাজ করব। যেহেতু আমি নারী তাই নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করব।

দীর্ঘ এই যাত্রার মা-বাবা ও স্বামীর অনুপ্রেরণায় এং তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তিনি আজ সাফল্যের শীর্ষে। অদম্য এই নারী দেশ ও দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পাওয়ায় সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।

সদ্য ঘোষিত ফলাফলে ৪১তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেধাবী মেয়ে আয়েশা আক্তার লাবনী।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খাবার নিয়ে বিপাকে রণবীর কাপুর

প্রাথমিক শিক্ষকদের ৩ দিনের কর্মবিরতি শুরু

মারা গেলেন কিংবদন্তি জার্মান অভিনেতা

কনকনে শীতে কাঁপছে তেঁতুলিয়া

৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিট প্ল্যান প্রকাশ

এ ছবিটিই বলে দেবে আপনার মানসিক চরিত্র

দুধ দিয়ে গোসল করে দাম্পত্যের ইতি টানলেন প্রবীর

দেশের বাজারে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

রাকুলের সতর্কবার্তা

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত

১০

হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন শেষে যা জানাল বিসিসি

১১

মধ্যরাতে পাকিস্তানের বোমা হামলায় ৯ আফগান শিশুসহ নিহত ১০

১২

যেসব দেশে থাকার জন্য টাকা পাওয়া যাবে

১৩

নিয়োগ দিচ্ছে আকিজ গ্রুপ

১৪

মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্য সহায়তায় নতুন কৌশলে যুক্তরাষ্ট্র

১৫

গায়েহলুদে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে বর-কনে

১৬

১৩ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন শিশু মাকসুদুর

১৭

বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরির সুযোগ, দ্রুত আবেদন করুন

১৮

আজ থেকে ঘরে বসেই মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করবেন যেভাবে

১৯

‘পরিমার্জিত’ শান্তি পরিকল্পনায় একমত যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন 

২০
X