টানা বর্ষণ ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানির ধাক্কায় সাগর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের পেকুয়ার কাটাফাঁড়ি ব্রিজ-করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাট সড়ক। ফলে পেকুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই সড়কের ধারিয়াখালী অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমনকি একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তে পুরো অংশ তলিয়ে যেতে পারে। টানা বর্ষণ ও পূর্ণিমার জোয়ারে সাগরে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রূপাইখালের ধারিয়াখালী অংশে সড়কে দুই চেইনের ব্যবধানে প্রায় পঞ্চাশ মিটার স্থান চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এমনকি রাস্তার অংশ বিশেষ ভেঙে সাগরের পানি উঠছে। যে কোনো সময় বিলীন হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে পারে। ফলে তলিয়ে যেতে পারে ধারিয়াখালীসহ কয়েকটি গ্রাম।
আরও পড়ুন : পানির জন্য হাহাকার, পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক
স্থানীয় বাসিন্দা ইখতিয়ার, আব্বাস উদ্দিন বলেন, মগনামা কাটাফাঁড়ি- উজানটিয়া করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাট সড়ক হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে আসছে। দুই ইউনিয়নের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ধারিয়াখালী অংশে দুটি পয়েন্টে ফাটল ধরেছে। স্লুইচ গেইট অংশে গত দুবছর ধরে ভাঙা-গড়া অবস্থা চলছে। চরম ঝুঁকিতে থাকায় কয়েক দফা যান চলাচল বন্ধও হয়ে গিয়েছিল। জেলা পরিষদের সদস্য এইচ এম শওকত ও সিএনজি চালকদের ব্যক্তিগত সহায়তায় ইটের টুকরো বসিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করে যান চলাচলাল স্বাভাবিক করে। তবে চলতি বর্ষায় এ সড়কের ওই ঝুঁকিপূর্ণ অংশ পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে।
কক্সবাজার জজ কোর্টের আইনজীবী ও উজানটিয়ার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, আমাদের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি। এ সড়কটির ওই অংশ দীর্ঘদিন ধরে ঝুকিপূর্ণ। ওই স্থানে টেকসই সংস্কার কাজ না করায় বারেবারে ভেঙে যাচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। এখন টানা বর্ষণ ও পূর্ণিমার জোয়ারে পানির ধাক্কায় সড়কের ওই স্থান বিলীন হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা করছি। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী বলেন, সড়কটি দুইটি ইউনিয়নের যোগাযোগ মাধ্যম। দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ চরম পোহাতে হবে।
উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, পুরো উজানটিয়া ও মগনামার দক্ষিণ অংশের লোকজন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে। বহুবার আইনশৃঙ্খলা কমিটি ও সমন্বয় সভায় এ সড়কের কথা বলছি। দুবার নিজের পকেটের টাকা দিয়ে সংস্কার করেছি। পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি বহনকারী গাড়ির কারণে সড়কের ফাটল ধরেছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, কয়েক মাস আগে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সংস্কার করা হয়েছিল। ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে ফের দেবে গেছে। তবে নিজের অর্থায়নে আবার সংস্কার করার ব্যবস্থা করব।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ বলেন, পাউবো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইউএনও স্যার কথা বলেছেন। তিনটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। আপাতত পানি আটকানোর জন্য সড়কের দুপাশে প্রতিরোধকের ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্তব্য করুন