বান্দরবানে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে জেলা সদরের ইসলামপুর, আর্মিপাড়া, গর্জনিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য রোববার (৬ জুলাই) থেকে মাইকিং করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। জেলায় এরই মধ্যে ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছে প্রশাসন।
রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৯১ মিলিলিটার বান্দরবানে বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
ভোগান্তিতে পড়া জেলা সদরের বালাঘাটার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, স্কুলের ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট পাচ্ছে। রিকশা, ভ্যানগাড়ি করে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। বালাঘাটা সড়কের আধা কিলোমিটার পর্যন্ত হাঁটুপানি।
ইসলামপুরের আরেক বাসিন্দা জাহানারা বেগম জানান, পানিতে ঘরবাড়ি সব ডুবে গেছে। কোথাও ঠাঁই নেই। এখন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছি। ঝুম ঝুম বৃষ্টি।
বান্দরবান আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এমদাদুল হক বলেন, রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলায় ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ৯টার পরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়া এবং পাহাড়ের পাদদেশে থাকা বাসিন্দাদের সতর্ক করতে প্রচার ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পাড়ায় পাড়ায় যাচ্ছেন তারা।
বান্দরবানের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সর সিনিয়র স্টাফ অফিসার নাজমুল আলম বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তিন নম্বর সতর্কসংকেত চলছে। বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসে পড়ছে। আমরা ওইসব জায়গায় যাচ্ছি। মাইকিং করছি। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার জন্য বলছি।
এদিকে বান্দরবান সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নার্গিস সুলাতানা জানান, আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সবাই সভা করেছি। প্রতিটি ইউনিয়নেও সভা করা হয়েছে। সবখানে মাইকিং করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে আসার জন্য বলা হচ্ছে। এখনো বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। ছোটখাটো পাহাড় ধস হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে প্রশাসনের বলে জানান ।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোহিদ উদ্দিন বলেন, আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি আছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাই যদি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চলে আসে তাহলে আমরা বড় ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পাব। উপজেলাগুলোতে শুকনো খাবার এবং অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, খাবারের কোনো সংকট হবে না।
মন্তব্য করুন