মিজানুর রহমান, ফেনী
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শারীরিক অক্ষমতাও দমাতে পারেনি আরিফকে

কোনো অসম্পূর্ণতাই আটকে রাখতে পারেনি কাজী আরিফুর রহমানকে। ছবি : কালবেলা
কোনো অসম্পূর্ণতাই আটকে রাখতে পারেনি কাজী আরিফুর রহমানকে। ছবি : কালবেলা

শারীরিক উচ্চতা মাত্র তিন ফুট। দুই হাত ও দুই পা বিকলাঙ্গ। চলাচল করেন তৈরি করা একটি ছোট রিকশায়। তাতে কী! কোনো অসম্পূর্ণতাই আটকে রাখতে পারেনি কাজী আরিফুর রহমানকে। সব বাধা ডিঙিয়ে তিনি হিসাববিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করেন।

পড়াশোনা শেষে আরিফ চাকরির জন্য নানা চেষ্টা-তদবির করেছেন কিন্তু পাননি। তাই বলে হতাশ হননি তিনি। নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিয়েছেন কম্পিউটার ট্রেনিং ও কোচিং সেন্টার। এ নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন সবার। এই উদ্যোগের মাধ্যমেই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চান আরিফ।

কাজী আরিফুর রহমানের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মমারিজপুর গোলাপুকুর গ্রামে। তিনি ইসমাইল কাজী বাড়ির মৃত মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ছেলে। চার বোন ও একমাত্র ভাই আরিফ। তার বাবা-মা মারা গেছেন।

স্থানীয়রা জানান, জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী আরিফ ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী ছিলেন। তিনি ভর্তি হন স্থানীয় ছিদ্দিক নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর একে একে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ফেনী সরকারি কলেজ থেকে ২০২০ সালে পাস করেছেন এমবিএ।

৩১ বছর বয়সী আরিফ চাকরির জন্য নানা মহলে ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু জোটেনি কোনো চাকরি। সর্বশেষ তিন শতাংশ জমি ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দাগনভূঞা চৌমুহনী রোডে দিয়েছেন কম্পিউটার ট্রেনিং ও কোচিং সেন্টার। গত ৪ ডিসেম্বর তিনি তার প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেন।

জানতে চাইলে আরিফ কালবেলাকে বলেন, পড়াশোনা শেষ করে নানা দরজায় ঘুরেছি শুধু। ভেবেছি একটা চাকরির সুযোগ পাব। কিন্তু সবার অবহেলা পেয়েছি। তাই ভেঙে পড়িনি। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে জীবন বাঁচাতে নিজের শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠান দিলাম। তবে স্থায়ী ইনকামের জন্য সরকার যদি আমাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

আরিফের প্রথম বিদ্যাপীঠ ছিদ্দিক নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার ভৌমিক কালবেলাকে বলেন, আরিফ আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিল। সে প্রতিবন্ধী হয়েও সর্বোচ্চ পড়াশোনা শেষ করেছে। তার ভবিষ্যতের জন্য হলেও একটি চাকরি দরকার। আশা করি সরকার তার প্রতি নজর দেবে।

এ বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স ম আজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আরিফের যোগ্যতা ও সক্ষমতা অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে কোনো কাজ দেওয়া সম্ভব হলে বিবেচনা করা হবে। তা ছাড়া জেলা প্রশাসনের কোনো নিয়োগ থাকলে আমরা তার জন্য সুপারিশ করব। এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা তার জন্য সুপারিশ করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসির ইউটিউব চ্যানেল চালু, মিলবে যেসব তথ্য

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তারের দাবি শিক্ষার্থী

চার বিভাগে ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি, পাহাড়ধসের আশঙ্কা

ভোলায় পাঁচ দিন ২০ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

থানা ব্যারাকে নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণ, তিনজন ক্লোজড

পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটারের মূল্যায়ন হয় : চরমোনাই পীর

তিস্তায় কার্টুন বক্সে ভাসছিল নবজাতকের মরদেহ

দেশের উন্নয়নে মেধাবী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে : চসিক মেয়র

কৃষক দল সম্পাদক বাবুলের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সতর্কবার্তা / ‘সাংবাদিকরা চুপ থাকলে সমাজ অন্ধকারে ডুবে যাবে’

১০

যেসব অনিয়মে বাতিল হবে এজেন্সির নিবন্ধন

১১

অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে সিলেট জেলা পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ : পুলিশ সুপার

১২

বগুড়ায় সাহিত্য উৎসব শুক্রবার, অংশ নিবে দুই শতাধিক কবি

১৩

বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি রোধে নতুন নির্দেশনা

১৪

জুলাই শহীদদের স্মরণে জবিতে গ্রিন ভয়েসের বৃক্ষরোপণ ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন

১৫

মার্কিন বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানে রুশ হামলা

১৬

মালয়েশিয়ার পর চীন সফরে যাবেন নাহিদ

১৭

৩১ দফাই হচ্ছে আমাদের জাতীয় সনদ : সুব্রত চৌধুরী

১৮

টিসিবির নিয়ন্ত্রণ হারানো ট্রাকচাপায় বৃদ্ধ নিহত

১৯

ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর বাতিল

২০
X