সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে মাদকাসক্ত ছেলের লাঠির আঘাতে কৃষক বাবা নিহত হয়েছেন। এ সময় মারধরে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহতের স্ত্রী। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চরগিরিশ ইউনিয়নে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সেলিম রেজা (৪৭) পেশায় একজন কৃষক। অন্যদিকে মারধরে আহত জান্নাতী খাতুন (৪২) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহতের ছোটভাই সিরাজুল ইসলাম জানান, আমার ভাতিজা জাহাঙ্গীর (১৯) মাদকাসক্ত। এ কারণে সংসারে বাবা-ছেলের মাঝে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লাগত। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে নেশার টাকা নিয়ে বাবা-ছেলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে এই ঝগড়ায় জাহাঙ্গীরের পক্ষ নিয়ে এগিয়ে আসেন তার চাচাতো ভাই মৃত আসমত প্রধানের দুই ছেলে সালাম মাস্টার ও শহিদুল ইসলাম। তারা উভয়ই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
তিনি জানান, কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমার ভাই সেলিমকে মারধর করতে থাকে। এ সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তার স্ত্রী জান্নাতী খাতুন (৪২)। এ সময় তাকেও ওই তিনজন মারধর করে। এক পর্যায়ে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সেলিম। রক্তক্ষরণের এক পর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে জাহাঙ্গীর ও দুই চাচাতো ভাই সালাত মাস্টার ও শহিদুল ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা সেলিম ও তার আহত স্ত্রীকে উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওইদিন রাত ১০টায় হাসপাতালেই মারা যান সেলিম মিয়া।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করেও সালাম মাস্টার ও শহিদুলকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম জানান, সেলিম একজন ভালো মানুষ ছিলেন। শুধু মাদকাসক্ত ছেলের হাতে বাবার প্রাণ গেল। এটা সত্যিই দুঃখজনক। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার।
চরগিরিশ ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে গোটা চরাঞ্চল। এ কারণে মারামারির ঘটনাও বেড়ে গেছে। কৃষক সেলিম হত্যায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
কাজিপুর থানার ওসি নূরে আলম কালবেলাকে জানান, ঘটনাটি মৌখিকভাবে জেনেছি। মরদেহের পোস্টমর্টেম হয়েছে জানতে পেরেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন