ফরিদপুরে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত বহিষ্কৃত হলেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জিয়া মঞ্চের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বহুল আলোচিত সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুজ্জামান কদর।
শুক্রবার (৯ মে) বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এ চিঠিতে জানানো হয়, তথ্য গোপন করে অন্য রাজনৈতিক দলে সক্রিয় থাকার অভিযোগে ফরিদপুর জেলা জিয়া মঞ্চ থেকে কদরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত ত্যাগী ও নির্যাতিত কর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়েছে। তবে তারা আরও বলছেন, এমন ভুল যেন ভবিষ্যতে আর না হয়।
এর আগে ৮ মে রাতে ‘আলমগীর কবির’ নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে কদরকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং কমিটির অনুমোদনপত্র প্রকাশ করে পোস্ট দেওয়া হয়। এতে জিয়া মঞ্চ ফরিদপুর জেলার সভাপতি করা হয় আব্দুল্লাহ আল মামুনকে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইব্রাহিম হোসেনকে। কদরকে রাখা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।
কিন্তু এই ঘোষণার পরপরই বিএনপি ও জিয়া মঞ্চের অভ্যন্তরে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রবাসী সাবেক যুবদল নেতা তারিকুল ইসলাম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘হায়রে আলফাডাঙ্গার বিএনপি! ধিক্কার জানাই। কতিপয় নেতা টাকার বিনিময়ে একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে পদ দিয়েছে। যারা ১৭ বছর মামলা-জুলুম সহ্য করেছে, ঘরেও শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি- তারা আজ উপেক্ষিত। টাকার কাছে হেরে যাচ্ছে ত্যাগী নেতারা।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কামরুজ্জামান কদর ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। একই কমিটিতে ছিলেন সেলিমুজ্জামান সেলিম ও বর্তমানে কারাগারে থাকা হারিচুর রহমান সোহান। তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক কবির হোসেনের স্বাক্ষরে এই কমিটি অনুমোদিত হয়।
এছাড়া কদর ছিলেন ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামি এইচ এম ফুয়াদের ঘনিষ্ঠ। এমনকি ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আরিফুর রহমান দোলনের পক্ষে মাঠে সক্রিয় ছিলেন।
বর্তমানে কদর বিএনপির ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করছিলেন। বিএনপির অনেক নেতার দাবি, এই প্রভাবের কারণেই জিয়া মঞ্চের পদটি তার হাতে যায়।
মন্তব্য করুন