কুমিল্লার মুরাদনগরের ৫ বারের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বাড়িতে মধ্যরাতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) মাতাল সেজে এ হামলা করেছে সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ নেতা নাজমুল হাসান।
সরেজমিনে জানা যায়, সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ নেতা নাজমুল হাসান। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনি সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বাড়িতে মোটরসাইকেলযোগে যান এবং বাড়ির দরজায় সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এ সময় বাড়িতে থাকা কায়কোবাদের ভাগিনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবুকে হত্যার উদ্দেশে হামলা করে এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ ঘটনায় উপস্থিত লোকজন বাধা দিলে নাজমুল মাতালের মতো অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। এ সময় তিনি কায়কোবাদ ও তার নেতাকর্মীদের গালমন্দ ও গুলি করে হত্যার হুমকিও দেন।
এ বাড়িতে কে পাঠিয়েছে- জানতে চাইলে নাজমুল বলেন, আমি কালা মুর্শিদ বাহিনীর লোক। এ বাড়িতে থাকতে হলে আমারে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।
পরে উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে আটক করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে জোরজবরদস্তি করে। পরবর্তীতে মুরাদনগরের ওসি আরও পুলিশ নিয়ে নিজেই গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রভাব দেখিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও নিরীহ মানুষদের নির্যাতন করত নাজমুল। শুধু তাই নয়, চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা ছিল তার পেশা। তার বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণসহ ১১টি মামলা রয়েছে।
সাবেক এমপির বাড়িতে হামলায় আতঙ্কিত মুরাদনগরের সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, একজন জাতীয় নেতার বাড়ি যদি নিরাপদ না থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?
স্থানীয় বাসিন্দা নায়েব আলী বলেন, কায়কোবাদ সাহেব সাবেক ৫ বারের এমপি ও জাতীয় নেতা। তার বাড়িতে মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ নেতা হামলা করে। এতেই স্পষ্ট মুরাদনগরের আইনশৃঙ্খলার কত অবনতি হয়েছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মুজিবুল হক বলেন, কায়কোবাদ দাদার বাড়ি মুরাদনগর সদরে। থানা থেকে বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি না। অথচ পুলিশের নাকের ডগায় কায়কোবাদের বাড়িতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীর হামলা হয়। মুরাদনগরের সাধারণ মানুষ কতটা অনিরাপদ এ ঘটনাই বড় প্রমাণ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে পূর্বের একটি মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে সে মামলায় চালান করেছি। তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করুন