ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্যামগঞ্জ স্টেশন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর নেত্রকোনা ও শ্যামগঞ্জের মাঝামাঝি এলাকায় হঠাৎ থেমে যায়। প্রথমে যাত্রীরা ভেবেছিলেন কোনো স্টেশনে পৌঁছেছে ট্রেনটি। কিন্তু জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে তারা দেখতে পান— এটি একটি জনমানবশূন্য ফাঁকা এলাকা।
এরপর ধীরে ধীরে যাত্রীদের চোখে পড়ে অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য— ট্রেনের ইঞ্জিন নেই। শুধু ১৩টি বগি দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্ধকারাচ্ছন্ন রেল ব্রিজের লাইনের ওপর। ইঞ্জিন চলে গেছে! যাত্রীদের ভাষায়, ইঞ্জিন যেন রাগ করে একাই ছুটে চলে গেছে নেত্রকোনায়।
শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নেত্রকোণা সদরের চল্লিশা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি নেত্রকোণা সদরের চল্লিশ এলাকায় পৌঁছে রেল ব্রিজে ওঠার পর হঠাৎ একটি শব্দ এবং ঝাঁকুনি তারা অনুভব করেন। পরবর্তীতে ট্রেনের গতি আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং এক সময় স্থির হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন, ট্রেনের ইঞ্জিন দাঁড়িয়ে থাকা বগিগুলো রেখে চলে গেছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, বগি রেখে ইঞ্জিন চলে যাওয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা হতে চলল, কিন্তু এখন পর্যন্ত রিলিফ ট্রেন আসার কোনো খবর নাই। এমন একটা জায়গায় আমরা আটকে আছি, যেখানে ট্রেন থেকে নামতেও পারছি না, কোথাও যেতেও পারছি না। অন্ধকারের মধ্যে এভাবে বসে থাকতে অনিরাপদ বোধ করছি।
মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, শ্যামগঞ্জ থেকে মোহনগঞ্জের পথে একটি ব্রিজের উপর ইঞ্জিন বগিগুলো রেখে একা এগিয়ে যায়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত ইঞ্জিন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এবং ট্রেন আবার যাত্রা শুরু করবে।
তিনি আরও জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রেনের স্টাফরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
রাতের অন্ধকারে ফাঁকা এলাকায় ইঞ্জিন ছাড়া ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য অভিজ্ঞতাটি উদ্বেগজনক হলেও পরিস্থিতি সামলে নিতে অনেকে কৌতুক ও রসিকতায় ভরিয়ে তোলেন মুহূর্তটিকে। তবে এ ঘটনায় রেলওয়ের তদারকি ও কারিগরি দায়িত্বশীলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।
মন্তব্য করুন