চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বাসের পক্ষে জীবন্ত উপন্যাস ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ : ডা. শফিকুর রহমান

চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে মরহুম ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়েত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি : কালবেলা
চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে মরহুম ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়েত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি : কালবেলা

চট্টগ্রাম কালচারাল একাডিমির প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক মরহুম ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ বিশ্বাসের পক্ষে জীবন্ত উপন্যাস ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে নগরীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে মরহুম ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম আজাদ।

ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ অনেক গুণে গুণান্বিত ছিলেন জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গুণী মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন সমাজ তার মূল্য বোঝে না। আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহর মৃত্যুর পর আমরা হাড়ে হাড়ে তা টের পাচ্ছি। ওবায়েদুল্লাহ অনেক গুণে গুণান্বিত ছিলেন। মানুষ দেখে, শুনে, পড়ে শিখে। তিনি এমনই একজন মানুষ যাকে দেখা, শোনা ও পড়া যেত। তিনি একজন কর্মবীর ছিলেন। কবি মতিউর রহমান মল্লিকের শূন্যতা পূরণ হয়েছিল ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহকে দিয়ে।

ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লার স্মৃতিচারণ করে ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ওবায়েদুল্লাহ ছিলেন দায়িত্বশীল। কোনো কাজে কখনও না করেননি তিনি। সংগঠনের কাজে তাকে দেশের বাইরেও পাঠানো হয়েছিল। পরিবার-পরিজন এবং নিজের ব্যক্তিগত কাজ ফেলে সবসময় দলের ডাকে সাড়া দিতেন তিনি। ওবায়েদুল্লাহ বলতেন, পরিবারের ডাকের চেয়ে দলের ডাক তার কাছে বড়। দলকে যে পরিমাণ সময় দিয়েছেন পরিবারকে তেমন সময় দেননি। তিনি পরিবারকে বলতেন, আমি তোমাদের সম্পদ নই, আমি দেশ ও দশের কল্যাণের সম্পদ।

জামায়েতের আমির আরও বলেন, ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লা ওপর ৩টি দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল। তিনি শিশু-কিশোর সংগঠক , সাংস্কৃতিমনা ও প্রকাশক সম্পাদক ছিলেন। অনেক নাটক, কবিতা, গান তিনি লিখেছেন। কারাবন্দিও ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রাম না হলেও জন্মের পর থেকে তিনি চট্টগ্রামেই থেকেছেন। আমরা ঢাকায় তাকে সপ্তাহে দুই দিন পেতাম। তিনি বিদেশে গিয়েছেন অথচ ফিরে এসে ভাউচার তৈরি করে তাকে খরচের জন্য দেওয়া টাকাসহ আরও বেশি টাকা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।

তার কাছে জানতে চাইলে বললেন, দলীয় কাজে বিদেশ গিয়েছি, ওখানে অনেকে আমার হাতে টাকা গুচিয়ে দিয়ে ছেলেমেয়েদের জন্য চকলেট নিয়ে যেতে বলেছেন। কিন্তু আমি তো সংগঠনের কাজে বিদেশে গিয়েছি। তাহলে এ টাকার মালিক আমার সংগঠন!

দলকে গোছানোর মাঝপথে ওবায়েদুল্লাহ আমাদের ছেড়ে আল্লাহর জিম্মায় চলে গেছেন। পরিবার ও সন্তানদের জন্য তেমন কিছু রেখে যাননি। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সংগঠনের খবর নিয়েছিলেন। তার শূন্যতা অপূরনীয়। দোয়া করি ওবায়েদুল ভাইকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন।

আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ওবায়েদুল্লাহ ভাইয়ের তুলনা তিনি নিজেই। মানুষের সাথে দীর্ঘসময় থাকলে কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে, কিন্তু এত দীর্ঘসময় থাকার পরও কারো সঙ্গে ন্যূনতম কথা কাটাকাটিও হয়নি ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর। বহুমুখী প্রতিভার ওবায়েদ ভাইয়ের শূন্যতা আমাদের কাঁদায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নগর আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, অষ্টম শ্রেণি থেকে শুরু করে ড. আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ’র জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের উজ্জ্বল নক্ষত্র। চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামানের সভাপতিত্বে ও কবি অধ্যক্ষ চৌধুরী আব্দুল হালিম এবং গীতিকার গোলাম মোস্তফার যৌথ সঞ্চালনায় স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ড. আবু বকর রফিক আহমদ, মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মুহাম্মদ আলী আজাদী, ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর বড় ছেলে উমর মুসান্না। দোয়া ও মুনাজাত করেছেন মাওলানা এবিএম সিদ্দিকুল্লাহ।

আরও স্মৃতিচারণ করেন বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ পারভেজ, শরীফ বায়জিদ মাহমুদ, আমিরুল ইসলাম, কবিতা আবৃত্তি ও বক্তব্য রাখেন মোস্তাক খন্দকার, চৌধুরী গোলাম মাওলা।

দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন নগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, ডা. এ কে এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-১১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী শফিউল আলম, চট্টগ্রাম-৮ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. আবু নাছের, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অধ্যক্ষ জাকের হোসাইন, হামেদ হাসান ইলাহী, এম এ গফুর প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমি অন্যায়ের কাছে মাথানত করার মতো লোক না : এ্যানি

একাধিক মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ফারুক

প্রতিদিন ২টি করে খেজুর খেলে কী ঘটে শরীরে? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

কুয়েটে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থী বহিষ্কার

এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড, মাঠে যা ঘটেছিল (ভিডিও)

খালেদা জিয়া কেমন আছেন, জানালেন মির্জা ফখরুল

নারী ইউপি সদস্যকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামী পলাতক

কফি পান করার সেরা সময় কখন?

সাংবাদিকনেতা সোহেলকে মামলায় জড়ানোয় বিএআরএফের তীব্র নিন্দা

গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরের পর বিবস্ত্রের অভিযোগ

১০

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধে সত্যিকারের দেশ গড়া সম্ভব : গোলাম পরওয়ার

১১

না ফেরার দেশে গিটারিস্ট সেলিম হায়দার

১২

ইয়ামির বিস্ফোরক মন্তব্য

১৩

টঙ্গী জোড় ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু

১৪

নিখোঁজের ৩ দিন পর পুকুরে মিলল হৃদয়ের মরদেহ

১৫

অস্ট্রেলিয়ায় খোলা জায়গায় ভারতীয়র মলত্যাগের ভিডিও ভাইরাল

১৬

এশিয়া কাপের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা ভারতের

১৭

দেশে ভিন্নমত প্রকাশ করলে তাকে শত্রু হিসেবে দেখা হয় : মির্জা ফখরুল

১৮

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

১৯

নাশকতার পরিকল্পনার সময় ধরা খেলেন হারুন

২০
X