রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘চা-নাশতার’ খরচে মিলছে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি

নিয়ম না মেনে তৈরি হচ্ছে ভবন। ছবি : কালবেলা
নিয়ম না মেনে তৈরি হচ্ছে ভবন। ছবি : কালবেলা

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নকশা অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে শুধু ‘চা-নাশতার’ খরচ দিয়ে একের পর এক ভবনের নির্মাণকাজ করছেন প্রভাবশালীরা। অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে এসব ভবন।

জানা যায়, পৌরসভার ৩৫ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে ৭ হাজার ৪১টি হোল্ডিং রয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভার হিসাবে ৮৭৮টি পাকা ভবন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুমোদন ছাড়া যত্রতত্র ভবন নির্মাণ একদিকে বাড়াচ্ছে ঝুঁকি, অন্যদিকে সৌন্দর্য হারাচ্ছে শহরের। এখনই এটি থামানো না গেলে চরম মূল্য দিতে হতে পারে পৌরবাসীকে।

পৌর এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যত্রতত্র ভবন নির্মাণে আশপাশের প্রতিবেশীরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন।

মানবাধিকার কর্মী মো. রেজাউল করিম বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু কখনই আইনের প্রয়োগ সঠিকভাবে করা হয় না। আইনের প্রয়োগ করা গেলে শহরবাসী ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেত। তাই ভবন নির্মাণে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, আমতলী পৌরসভার কিছু অসাধু ব্যক্তি চা নাশতার খরচ ও মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে সরকারি জমিগুলোতে অবৈধভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করার সুয়োগ করে দিচ্ছেন।

সরেজমিনে আমতলী পৌরসভা ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে বরফ মিলসংলগ্ন আশিষ চন্দ্র দাস পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। স্থাপনা নির্মাণে পৌরসভার কোনো অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌরসভার সার্ভেয়ার জহির এসেছিলেন, চা-নাশতা খরচ দিয়েছি; অনুমোদন করিয়ে দেবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে পৌরসভার সার্ভেয়ার মো. জহির বলেন, আমি কোনো টাকা পয়সা নিইনি।

এ ছাড়াও ৫নং ওয়ার্ডে দেলোয়ার হোসেন, ৪নং ওয়ার্ডের শ্মশানঘাট সংলগ্ন রহমান মিয়া, পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ফেরিঘাট সলগ্ন মামুন মৃধা ৪নং ওয়ার্ডের কালাম মিয়া সরকারি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ১নং খতিয়ানে জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এ ছাড়াও আমতলী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডেও বিভিন্ন স্থানে এভাবে সার্ভেয়ারকে ম্যানেজ করে ভবন নির্মাণ করা হলেও দেখার কেউ নেই।

আমতলী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মজিবুল হায়দার বলেন, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হানিফ জানান, নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণে বাড়ছে ঝুঁকি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে পৌরসভার ভবন নির্মাণ আইন অমান্য করে অনেকেই জলাশয় ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। এটি এখনই থামানো দরকার। তা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হতে পারে।

আমতলী পৌরসভার প্রশাসক মো. রোকনুজ্জামান খান জানান, আমতলী পৌরসভা থেকে বর্তমানে কোনো অনুমোদন ছাড়া নতুন ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর আগে যারা বিধি না মেনে ভবন নির্মাণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি

সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ফিরছেন ফোনলাপ ফাঁস হওয়া এনসিপি নেতা তুষার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার 

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

চেতনানাশক খাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতি

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ঘোষণা

প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে ছাত্রদলের নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে চাকরি খোয়ালেন বেরোবি সমন্বয়ক

হাওর ও চরাঞ্চলের শিক্ষক বদলির তদবির আসে ওপর থেকে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১০

জয় স্যুটকেস ভরে টাকা নিয়ে গেছে : হাবিব-উন-নবী সোহেল

১১

২৫ বছর ধরে বাঁশির মায়ায় আটকে আছে শফিকুলের জীবন

১২

একাত্তরেও আ.লীগ পালিয়েছে, এবারও পালিয়ে গেছে : টুকু

১৩

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু, শেষ হচ্ছে কবে

১৪

তিন দিনের মধ্যে সাদাপাথর ফেরত না দিলে ব্যবস্থা

১৫

উগান্ডার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি, জানা গেল নেপথ্য কারণ

১৬

ইসহাক দারের সঙ্গে কী আলোচনা হলো বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির

১৭

মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু রোববার : রাকসু ট্রেজারার

১৮

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক অনুষ্ঠিত

১৯

পাথরের জন্য মাইকিং, ডেডলাইন ২৬ আগস্ট

২০
X