সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক আহতের নাম তালিকার দুই জায়গায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রকৃত আহত অনেকের নাম তালিকায় না উঠালেও অনেকে ভুয়া চিকিৎসা সনদ নিয়ে সরকারি তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। সিভিল সার্জন কার্যালয় ও ওসমানী হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী এমন কাজে জড়িত।
কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৫ মার্চ প্রকাশিত গেজেটে সিলেটে আহত ফখরুল হাসানের নাম দুই জায়গায় এসেছে। সিলেট নগরের বাগবাড়ি এলাকার দুর্বার ১৯ এলাকার মো. বিলাল মিয়ার ছেলে ফখরুল হাসানের নাম ৩৫৬ ও ২৭১ নম্বরে এসেছে। এ নিয়ে ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বাগবাড়ি এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ফখরুল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়েছেন বলে আমার জানা নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ফখরুল হাসানের নাম ভুলে দুইবার এসেছে। তবে তিনি সিলেট জেলা প্রশাসক অফিসে এটা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ফখরুল হাসান কালবেলাকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আমি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। বর্তমানে অর্থপেডিক্সের ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা চালচ্ছি। ভুলক্রমে সার্ভার সমস্যা কারণে আমার নাম দুইবার চলে এসেছে। আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে দেখি আমার নামে দুইটি চেক এসেছে। পরে একটি চেক আমি গ্রহণ করি ও অপরটি জমা দিয়েছি। ডিসি অফিসে গিয়ে আমার নাম দুইবার আসায় এডিসিকে জানিয়েছি। এ ছাড়া তারা আমার একটি নাম কেটে আরেকেটি নাম কেটে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ফখরুল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত সোজাভাবে হাঁটতে পারেন না। ভুলে গেজেটে উনার নাম দুই বার চলে এসেছে। এ বিষয়ে ডিসি অফিসে তিনি চেক নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে কার্ড দিয়ে হস্তান্তর করেছেন।
তিনি বলেন, যারা কম্পিউটারে টাইপ করেছে তারা ভুল করে দুই জায়গায় নাম দিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার সভাপতি আক্তার হোসেন কালবেলাকে বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছে তাদের অনেকের নাম এখনো লিস্টের আওয়াত আসেনি। কিন্তু যারা আহত হননি তাদের অনেকের নাম এসেছে- এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করছি, যদি এই কাজগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. বদরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, একজনের যে দুই নাম এসেছে আমার জানা নেই। এ রকম থাকলে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
সিলেট সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, এক ব্যক্তির দুই নাম- এ বিষয়ে আমার জানা নেই। যে ডাক্তার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তালিকা করেছেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
মন্তব্য করুন