এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত মারুফা আক্তার মায়ার। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তার স্বজনরা।
জানা যায়, মারুফা আক্তার মায়া উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের নন্দইল গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক মুরশিদুলের মেয়ে ও ধরঞ্জী কুতুবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার বাবা যেদিন ভ্যান চালিয়ে আয় করতে পারেন সেদিন পরিবারের সবার ভাত জোটে, নয়তো সবাইকে উপোস থাকতে হয়। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মায়া ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখা চালিয়ে আসছিল।
মায়ার বাবা জানান, ছোট থেকেই আমার মেয়ে পড়ালেখার প্রতি খুবই আগ্রহী। কিন্তু টাকার অভাবে কিছুই দিতে পারিনি। অধিকাংশ দিনই না খেয়ে স্কুলে যেত। পড়াশোনা ছাড়া তাদের কোনো চাহিদা নেই। নিজ মেধাগুণে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে। আমার সহায় সম্বল বলতে তেমন কিছুই নেই। ভ্যান চালিয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে মেয়েসহ পাঁচ সদস্যের পরিবারের সবার মুখের ভাত জোটাই। এ ছাড়া অসুস্থতার কারণে পরিবারের কিছু ঋণও আছে সেগুলোও এখন পরিশোধ করতে হবে। মেয়ের পরীক্ষার এমন ভালো রেজাল্ট শুনে যেমন খুশি লাগছে, আবার মেয়েকে টাকার অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি করাতে না পেরে হতাশায় দিন কাটছে।
মায়া বলেন, ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে পড়ালেখা করে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করব। কিন্তু এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হলেও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারব কি না সেই শঙ্কায় দিন কাটছে। আমি পড়াশোনা করতে চাই।
প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের গ্রামের মেধাবী মেয়ে মায়ার বাবা একজন হতদরিদ্র ভ্যানচালক। তাদের সংসারে সর্বদাই অভাব লেগেই থাকে। এ কারণে মেয়েটার পড়ালেখা আগামীতে অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে।
ধরঞ্জী কুতুবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি খুব কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়েছে। আমি তার ভবিষ্যৎ জীবনে সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন