নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার দল’ -এর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল বলেছেন, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের পর মানুষের যে দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের যে ত্রিমুখী এজেন্ডা নিয়ে সরকার যাত্রা শুরু করেছিল, এখন তারা সেটির ভার সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দলটির মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে মতবিনিময় সভায় দলের রূপরেখা তুলে ধরেন শীর্ষ নেতারা এবং উপস্থিতদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এ সময় শামীম কামাল বলেন, সংস্কার বলতে দেখতে পাচ্ছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ছোটখাটো বিষয় ছাড়া কোনোরকম মতৈক্য পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার দল মনে করে, সংস্কার নিয়ে খুব বেশি দূরে যেতে পারবে না।
তিনি বলেন, বিচার একটা লম্বা প্রক্রিয়া, যেটি কম সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না। বিশেষ করে দু-একটি টোকেন বিচার যদি করা যায়। বিশেষ করে যারা শীর্ষস্থানীয় অপরাধী ছিল, স্বৈরাচার ছিল। দু-একটি টোকেন বিচার করতে হবে। এখন সরকারকে নির্বাচনের দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণ এখন অতিষ্ঠ, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। সেই মুক্তির জন্য আপাতত একটি নির্বাচন দিয়ে ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ পর্যায়ে যেতে পারে, সেটা হবে সর্বোত্তম পন্থা অবলম্বন বলে দলের পক্ষ থেকে আমরা মনে করছি।
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে দলের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সংসদে নিম্নকক্ষে বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থাটা ভালো। কিন্তু যদি উচ্চকক্ষ হয় সেখানে পিআর পদ্ধতি থাকলে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এ রকম ভারসাম্য নিয়ে কিছুদিন পিআর পরীক্ষামূলকভাবে করা যেতে পারে। তবে পিআর পদ্ধতি সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে সম্ভব হলেও আমাদের মতো ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক দেশে সম্ভব না।
শিক্ষিত, সৎ, দেশপ্রেমিক এবং চরিত্রবান মানুষরাই জনতার দলের প্রার্থী হবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে কোনো ধরনের বদমাশ, চোর, ডাকাত, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীর কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের প্রার্থী হতে হলে এ যোগ্যতায় পাস করতে হবে। এখন আমাদের দলের পক্ষ থেকে যারা প্রার্থী হতে যাচ্ছেন, তারা কেউই ভয়ে প্রকাশ করতে পারছেন না। একজন প্রার্থী যদি মামলার ভয়ে এলাকায় যেতে না পারেন। রংপুর বিভাগে ১২ থেকে ১৫ জন শক্তিশালী প্রার্থী আছেন, কিন্তু তারা কেউই মঞ্চে আসতে চান না। এ রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি।
একটি বিশেষ দল অন্য দলগুলোকে মাথা তুলতে দিচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, মামলার টার্গেট কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, মামলার টার্গেট হচ্ছে যার টাকা আছে। একটা মামলা হচ্ছে, আসামি ৭০ জন, তার সঙ্গে আরও ১০০-২০০ জন। চাঁদাবাজরা ওটার ভয় দেখিয়ে টাকা নিচ্ছে।
এ সময় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহাবুবুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আবুল কালাম মো. জাকি, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মেজর (অব.) জাকির হোসেন, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব.) বদরুল আলম সিদ্দিকী, মুখপাত্র ও মুখ্য সমন্বয়ক মেজর (অব.) ডেল এইচ খান উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন