ঝালকাঠির রাজাপুরে র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে (৫৫) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সাতুরিয়া ইঁদুরবাড়ি গ্রামে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তোফাজ্জেল হোসেন রাজাপুর থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতিবেশী মো. ইব্রাহিম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হতেই তারা দুজনসহ চারজন তোফাজ্জেল হোসেনকে ঘিরে ধরে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৯ জনের নামে লিমন হোসেনের দায়ের করা অভিযোগ তুলে নিতে তারা হুমকি প্রদান করেন। এতে লিমন হোসেনের বাবা তোফাজ্জেল হোসেন অস্বীকার করায় আসামিরা তাকে পিটিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল লিমন হোসেনের পরিবারের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রবেশ করে মো. ইব্রাহিম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে ৬-৭ জন বাঁশ কাটার চেষ্টা করেন। এতে তোফাজ্জেল হোসেন বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে আহত করেন আসামিরা।
এ ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানা একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ঝালকাঠির আদালতে মো. ইব্রাহিম হাওলাদারের দুই বছরের কারাদণ্ড ও আবদুল হাইয়ের ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়। ২০২৪ সালে একমাস কারাভোগ করে ইব্রাহিম হাওলাদার জামিনে বের হয়ে বিভিন্ন সময়ে লিমনের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার ছেলে লিমন হোসেনের দায়ের করা অভিযোগ তুলে নিতে অস্বীকার করায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। ইব্রাহিম হাওলাদারের নেতৃত্বে এর আগেও আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে মো. ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লিমন প্রভাব খাটিয়ে এ মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতুরিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে গুলিবিদ্ধ হন লিমন। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। জীবন বাঁচাতে তার বাম পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। ঘটনার পর র্যাব লিমনসহ আটজনের নামে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করে। সেই মামলায় র্যাবের পক্ষে ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন অভিযুক্ত ইব্রাহিম হাওলাদার।
মন্তব্য করুন