সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নে হরিনগর বাজার সংলগ্ন ‘প্যান্ডামিক ফিশারিস লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধ দখলমুক্ত করার পাশাপাশি দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে শ্যামনগর উপজেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্যান্ডামিক ফিশারিস লিমিটেডের ম্যানেজার মো. আব্দুল্যাহ আল-কাইয়ুম এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্যান্ডামিক ফিশারিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এএম সাইদুর রহমান ৩১২ ভূমি মালিকের কাছ থেকে ১৫ বছরের (৩১ জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ জুলাই ২০৩৫ সাল পর্যন্ত) চুক্তিতে এক হাজার বিঘার ঊর্ধ্বে জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলমান রেখেছেন। তরুণ উদ্যোক্তা হতে অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাইয়ুম এ প্রতিষ্ঠানে বেতনভুক্ত ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চেয়ারম্যান তার নিজস্ব বিনিয়োগ ছাড়াও এনআরবিসি ব্যাংক থেকে ১৬ কোটি টাকা লোন নিয়ে এখানে বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি চালমান রেখেছেন। কিন্তু ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাবেক নেতা মরহুম আব্দুস সাত্তার মোড়লের ছেলে সালাউদ্দিন শাওন তার সহযোগীদের নিয়ে প্রকল্পটি দখল করেন।
ম্যানেজার মো. আব্দুল্যাহ আল-কাইয়ুম বলেন, এ ঘটনায় গত ২ জুলাই শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় দুষ্কৃতকারীরা যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে না পারে এবং ১৬ কোটি টাকার বিনিয়োগ যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় ও প্রকল্পটি অবৈধভাবে দখল করতে না পারে তা রুখতে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে কাশেম, শাওনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা করা হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আদালতে মামলা করার পরও আবুল কাশেম মোড়ল ও শাওনের নেতৃত্বে তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন আইন অমান্য করে গত ১৬ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দফায় দফায় প্রজেক্টটিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় ২০টি গ্রুপে লোক দিয়ে তারা ওই প্রজেক্টের ১৮০টি পুকুরের মধ্যে শতাধিক পুকুরে বেড় জাল ও খেপলা জাল ফেলে ১০/১২ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির উৎপাদিত মাছসহ প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট বা ক্ষতিসাধন করেছে।
কাইয়ুম আরও বলেন, এ ঘটনায় প্রজেক্টটির সাইড ম্যানেজার আলমগীর কবির হামলাকারী আবুল কাশেম মোড়ল ও শাওনসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৭০/৮০ জনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার আসামিরা অনেকেই জামিন না নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং তারা বর্তমানে অবৈধভাবে প্রজেক্ট দখলে রেখে উৎপাদিত মাছ লুটপাট অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার পর পুলিশ ৪ বার ও সেনাবাহিনী সদস্যরা ৩ বার ঘটনাস্থলে গিয়েছে। কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পর তারা আবার হামলা ও লুটপাট করে। এটি শুধু প্যান্ডামিক ফিশারিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়, বরং সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তিনি প্রজেক্টটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে ও দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মন্তব্য করুন