এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০২:৪০ পিএম
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বামীর কবর আঁকড়ে আছেন জামিলা

বৃদ্ধা জামিলা। ছবি : কালবেলা
বৃদ্ধা জামিলা। ছবি : কালবেলা

বিধবা মোমেনা বেগম। বয়স ৬৫। লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তা বাগদারা এলাকার বাসিন্দা। এক সময় তাদের গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু ছিল। এখন সবই স্মৃতি। কারণ সবই গেছে তিস্তার পেটে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে তিনি এখন স্বামীর কবর বাঁচানোর চিন্তায় কাতর। কখন যে তিস্তায় গিলে খায় স্বামীর শেষ স্মৃতি!

এদিকে তিস্তায় সব হারিয়ে নিঃস্ব জামিলা বেওয়া (৭০) আঁকড়ে ধরে আছেন ভিটেমাটি। স্বামীর শেষ সম্বল ওই বসতভিটার অর্ধেক এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটার এক কোণে এলাকাবাসীর সহায়তায় চালাঘর তুলেছেন বৃদ্ধ। সেখানেই খেয়ে না খেয়ে একাই পড়ে থাকেন। অভাবের সংসারে শ্রমিকের কাজ করতে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছে দুই ছেলে। তারা শত চেষ্টা করেও মাকে সঙ্গে নিতে পারেননি।

জামিলা স্বামীর ভিটা ছেড়ে যেতে রাজি নন। সাফ কথা, ‘যত কষ্টই হোক, স্বামীর ভিটাতেই যেন মৃত্যু হয়।’ এখন কপালে হাত দিয়ে শুধু নদীর দিকে তাকিয়ে থাকেন। নদী গিলে খাওয়া বিলীন স্বামীর স্মৃতিবিজড়িত ঘরের কথা মনে করে চোখের পানি ফেলেন।

মোমেনা বেওয়া বলেন, ছেলেরা বউ বাচ্চাদের নিয়ে ঢাকায় অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করেন। এক দিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয় তাদের। ছেলেদের ইচ্ছা থাকলেও অর্থের অভাবে আমাকে একটি ভালো ঘর তৈরি করে দিতে পারেনি। তিস্তা নদীর পাশেই বালুর ওপর একটা চুলা থাকলেও চাল, ডাল, তরিতরকারি এবং খড়ি না থাকায় প্রতিদিন রান্নাও করতে পারি না। একটি টিউবওয়েল ছিল, সেটিও নদীতে চলে গেছে। পানিটুকুও নিয়ে আসতে হয় অন্যের বাড়ি থেকে।

সদর উপজেলা তিস্তা বাগদারা এলাকায় দেখা যায়, ভাঙনের মুখ থেকে ঘর সরানোর কাজে ব্যস্ত আব্দুর রহিম ও আব্দুর রশিদ। তারা জানান, প্রতি বছর বাড়িঘর সরাতে হয়। এতে প্রতি বছরই নতুন করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিস্তা জমাজমি সব কেড়ে নিয়েছে। রয়েছে শুধু ভিটেমাটি। এটুকু চলে গেলে মাথাগোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের।

এদিকে তিস্তার ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলমান রেখেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, প্রতি বছর বন্যার পানি প্রবেশের সময় এবং নেমে যাওয়ার সময় তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন সম্ভাব্য এলাকাগুলো চিহ্নিত করে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। তিস্তার ভাঙনকবলিত এলাকায় ব্যাগ ফেলার কাজ চলমান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

গভীর রাতে চলন্ত বাসে আগুন

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে চাই : মান্না

মোটরসাইকেলে এসে আগুন দিয়ে পালাল দুর্বৃত্তরা

জামালপুরে একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট

পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ইভ্যালির রাসেলের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড

সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ আটক ৪

ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার

১০

আ.লীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পড়ে ছিল ৯ রাউন্ড গুলির খোসা

১১

উত্তরায় যুব-স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অবস্থান

১২

জবি ছাত্রী হলে ছাত্রদলের উপহার সামগ্রী বিতরণ

১৩

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার কফিল উদ্দিনের

১৪

বরগুনায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

১৫

কক্সবাজারে মার্কেটে আগুন

১৬

৮ দলের কর্মসূচি নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পোস্ট

১৭

চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন, সর্বোচ্চ সতর্কতায় পুলিশ

১৮

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নদীগুলোর নাব্যতা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেবে : বাচ্চু

১৯

নিক্সনের গানম্যানের নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছিল পেট্রোল বোমা ও ককটেল : পুলিশ

২০
X