কুমারখালি (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কবজিবিহীন হাত দিয়ে ইট-পাথর ভাঙেন শামীম

কবজিবিহীন হাত দিয়ে পাথর ভাঙেন শামীম। ছবি : কালবেলা
কবজিবিহীন হাত দিয়ে পাথর ভাঙেন শামীম। ছবি : কালবেলা

জন্ম থেকেই একটি হাতের কবজি নেই শামীম হোসেনের (৩৫)। সেই হাতটিই তার শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী অঙ্গ। শামীম হোসেন তার সেই হাত দিয়ে ভাঙতে পারেন পাথরও।

শামীমের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসায়। তার দিনের অধিকাংশ সময় কাটে বিভিন্ন ট্রেন স্টেশনে। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করা তার প্রতিদিনের কাজ। কারণ ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের একটু শারীরিক কসরত দেখিয়ে যে পয়সা মেলে, এ দিয়েই চলে তার সংসার।

শামীমের কসরত নিজ চোখে না দেখলে অনেকের কাছেই গল্প মনে হতে পারে। যে যাই মনে করুক না কেন, শামীমের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই কবজিবিহীন হাতটিই। ওই হাত দিয়ে মানুষকে বিস্মিত ও আনন্দ দেওয়ার বিনিময়ে যে টাকা পান, তা দিয়েই চলে তার সংসার।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমারখালী রেলওয়ে স্টেশনে দেখা মেলে শামীমের। এ সময় তিনি কিছু পয়সার জন্য তার সেই কবজিবিহীন হাতটি দিয়ে সিমেন্টের পিলার ও পাথর ভেঙে মানুষকে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

তার এই কসরত দেখে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকেন ট্রেনের যাত্রীরা। একপর্যায়ে তিনি রেললাইনের ওপর পাথর রেখে সেই কবজিবিহীন হাতটি দিয়ে তা ভাঙতে থাকেন।

সেখানে উপস্থিত থাকা সাধারণ মানুষ জানান, রেললাইনের ওপর পাথর রেখে কবজিবিহীন হাতের মাধ্যমে সেটি ভাঙার চেষ্টা করছেন। আমরা প্রথম মনে করেছি হয়ত পাগল হবে। পরে দেখলাম পাথর হাত দিয়ে ভেঙে ফেললেন তিনি।

তারা আরও জানান, বিভিন্ন স্টেশনে তাকে দেখা যায়। সত্যি তার কাজ দেখে বিস্মিত হয়েছি। তার শারীরিক এই কসরত দেখে উপস্থিত অনেকেই সাধ্যমতো সাহায্য দেন। নিজে না দেখলে অন্যের কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারতাম না।

এ বিষয়ে শামীম হোসেন বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর ধরে এ কাজ করছি। বিয়ে করেছি ১২ বছর আগে। সংসারে স্ত্রী ও বাবা-মা আছে। আমার এক হাত জন্মগতভাবেই এমন। তাই আমাকে কেউ কোনো কাজকর্মে নেয় না। কী করব, না খেয়ে তো আর থাকতে পারি না। আবার ভিক্ষা করাও সম্ভব নয়। যত শক্ত কিছু হোক, এ হাত দিয়ে আঘাত করলেও ব্যথা পাই না। এটা আমার আয়-রোজগারের পথ। এটা দেখিয়ে যা রোজগার হয় তা দিয়েই সংসার চলে।

এই বিষয়ে কুমারখালী রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এই শামিমের সঙ্গে প্রায়ই আমার দেখা হয়। স্টেশনের রেল লাইনে বসে পাথর ভাঙে। পাথর ভাঙা দেখতে অনেক লোক জোড় হয়। আবার কেউ কেউ তাকে টাকাও দেয়।

তিনি আরও বলেন, জন্ম থেকে তার হাত এমন। বিয়েও করেছেন। তিনি এভাবে বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে পাথর ভেঙে মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস তৈরি করে। এতে যা টাকা পায় তা দিয়েই সংসার চালায়। আল্লাহ তাকে এত শক্তি দিয়েছে— যে পাথর হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতে গেলে অনেক বাড়ি মারতে হয়, সেখানে তিনি হাত দিয়েই তা ভেঙে দিচ্ছেন। অবাক করা বিষয়!

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আলভারেজ নৈপুন্যে অ্যাথলেটিকোর মাঠে বিধ্বস্ত রিয়াল

বিইউবিটিতে বিএপিএস ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং ক্যাম্প সম্পন্ন

প্রিমিয়ার লিগে সিটির বড় জয়, চেলসি-লিভারপুলের হার

ময়লা ছিটিয়ে পরিষ্কার অভিযান, ভিডিও ভাইরাল

নেছারাবাদে স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

ভ্যাপসা গরমসহ ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

শিক্ষার মানোন্নয়নে ইউসিটিসির সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত

সৌদির কাছে পরমাণু অস্ত্র বিক্রি করছে পাকিস্তান?

বরিশাল বিভাগে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত, হটস্পট বরগুনা

তিন উপজেলার ৪৬ পূজামণ্ডপে খালেদা জিয়ার অনুদান

১০

ভারতের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া বাংলাদেশের

১১

মনিরামপুরে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন

১২

নিজেদেরই এক অঙ্গরাজ্যে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

১৩

এস আলমের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই : ফখরুল 

১৪

কত পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে, জানাল ইসি

১৫

ডাকসুতে অনিয়মের অভিযোগ, যা বলছেন সাদা দলের রিটার্নিং অফিসাররা

১৬

৮ দফা দাবিতে ট্রেন আটকে দিল আন্দোলনকারীরা

১৭

জুবিনের মৃত্যুর রহস্য ঘিরে ধোঁয়াশা, সরকারের কাছে যে দাবি জানালেন পাপন

১৮

পূজার ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভিডিপি সদস্য খুন

১৯

আবারও ম্যানইউর ভরাডুবি

২০
X