রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আ.লীগ নেতার হিমাগারে সেফটিপিন ফুটিয়ে তিন ভাইবোনকে নির্যাতন

বিক্ষুব্ধ জনতা হিমাগারে ভাঙচুর চালায়। ছবি : কালবেলা
বিক্ষুব্ধ জনতা হিমাগারে ভাঙচুর চালায়। ছবি : কালবেলা

রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া এলাকায় জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারের মালিকানাধীন হিমাগারে আটকে রেখে তিন ভাইবোনকে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে বায়া এলাকায় অবস্থিত ‘সরকার কোল্ড স্টোরেজ’-এর অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে আহসান উদ্দিন সরকার জিকো (৪৫), মেয়ে আঁখি (৩৫) ও হাবিবা (৪০)।

আহত তিনজনের মধ্যে তরুণের বয়স ২৭। তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। সঙ্গে ছিলেন তার খালাতো বোন (৩০) এবং ছোট বোন (১৩)। তাদের বাড়ি পবা উপজেলা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মোহাম্মদ আলী সরকারের পরিবারের সদস্যরা ফোন দিয়ে ভুক্তভোগীদের ডেকে আনে। ফোন পেয়ে তারা হিমাগারে পৌঁছানো মাত্রই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, শুরু হয় নির্যাতন। তিনজনকে টেনেহিঁচড়ে অফিসকক্ষে নিয়ে মোবাইল কেড়ে নেয় আসামিরা। যেন তারা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। ভেতরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে লাঠির আঘাত, চুল টানা, গালাগাল চলতেই থাকে।

একপর্যায়ে সেফটিপিন দিয়ে তাদের শরীরে ফুটানো হয়। রক্তাক্ত তিনজনের চিৎকার শুনে ছুটে আসে স্থানীয় লোকজন। হিমাগারের দরজা খুলে দিতে বললেও কেউ সাড়া দেয়নি। দরজা খোলার পর তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।

ক্ষুব্ধ জনতা হিমাগার ঘিরে ফেলে। তিন অভিযুক্তকে ভেতরে অবরুদ্ধ করে রেখে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। উত্তেজিত জনতার কারণে পুলিশ প্রথমে তাদের বের করতে পারছিল না। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তিনজনকে আটক করা হয়। এর আগে জনতা হিমাগারের সিসি ক্যামেরা ও কাচের জানালা ভেঙে দেন।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, মোহাম্মদ আলী সরকারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু তার ছেলেমেয়েরা বিষয়টা ভালোভাবে নেয়নি। তারা মনে করত, তার সঙ্গে আমার অনৈতিক সম্পর্ক আছে। এ সন্দেহ থেকেই মঙ্গলবার সকালে ফোন করে ডেকে আনা হয়। আমি একা না গিয়ে সঙ্গে ভাই ও ছোট বোনকে নেই। কিন্তু পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন শুরু হয়।

এক বৃদ্ধা বলেন, মানুষ মানুষকে এমন কষ্ট দিতে পারে? যেখানে মা, বোন, মেয়ে সবাই নিরাপদ থাকার কথা। তাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছে।

এয়ারপোর্ট থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এবার আরেক অপ্রতিরোধ্য সক্ষমতা অর্জনের পথে পাকিস্তান

কুমিল্লায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, ২ যুবক গ্রেপ্তার

মেঘনায় অভিযানিক দল ও জেলেদের সংঘর্ষ

হংকংয়ের বিপক্ষে জয় নিয়ে আশাবাদী হামজা

যে ৬ সমস্যায় কখনোই এআইয়ের পরামর্শ নেওয়া যাবে না

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

চাঁদাবাজদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে : কফিল উদ্দিন

ডাকসুর জিএস ফরহাদ হোসেনকে রাঙামাটিতে সংবর্ধনা

পুলিশ সদস্যদের হামলা ও অপদস্তের প্রতিবাদ দুই সংগঠনের 

ফুটপাতে পাওয়া সেই নবজাতককে নিতে চান ২৩ দম্পতি

১০

আগামী বছর থেকে ফুটবল ক্যালেন্ডারে আসছে বড় পরিবর্তন

১১

ট্রাম্পের জন্মদিনে হোয়াইট হাউসে ইতিহাস রচনা করবে ইউএফসি লড়াই

১২

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা সংস্কার কমিশন করা হবে : তারেক রহমান

১৩

আধুনিক যন্ত্রেই নিশ্চিত হবে নিরাপদ খাদ্য : মেয়র শাহাদাত

১৪

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত

১৫

একযোগে গণঅধিকার পরিষদের ৩৬ নেতার পদত্যাগ

১৬

মেঘনা নদীতে নৌযানে চাঁদাবাজি, সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৫

১৭

ইরাক থেকে প্রচুর তেল নিচ্ছে চীন-ভারত

১৮

‘রোহিত-বিরাটের বিদায়ের পিছনে দায় গম্ভীরের’

১৯

৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, এনবিআরের সদস্য বেলালের নামে দুদকের মামলা

২০
X