চট্টগ্রামের হালিশহরে রেলওয়ের জমিতে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণের উদ্যোগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন রেলওয়ের শ্রমিক-কর্মচারীরা। ধর্মীয় স্থাপনা ও কবরস্থানের জায়গা দখল করে প্রকল্প নেওয়ার অভিযোগ তুলে তারা ওই ইজারা চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে নগরীর সিআরবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন শ্রমিকরা। পরে জিএমের আশ্বাসে দুপুর ১টার পরে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
রেলওয়ের সূত্র জানায়, হালিশহরের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) এলাকায় ২১ দশমিক ২৯ একর জমি ২০২১ সালে কনটেইনার কোম্পানি লিমিটেড অব বাংলাদেশকে (সিসিবিএল) বাণিজ্যিকভাবে ইজারা দেওয়া হয়। পরে প্রতিষ্ঠানটি সেখানে আইসিডি নির্মাণের জন্য সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে। সম্প্রতি ওই এলাকায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, রেলের ওই এলাকায় প্রচুর খালি জমি থাকলেও কবরস্থান ও মসজিদের সংলগ্ন জায়গাতেই ডিপো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই স্থানে একটি মাজার ও জলাশয়ও রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এম আর মঞ্জু বলেন, ‘বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়ে রেলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ কবরস্থান, ধর্মীয় স্থাপনা ও জলাশয়ের শ্রেণি পরিবর্তন করে জালিয়াতি করেছে। প্রায় ৪৫০টি কবর রয়েছে সেখানে। সব জেনেও ইজারা দেওয়া হয়েছে।’
রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যেই মসজিদ ও কবরস্থান উচ্ছেদের চক্রান্ত চলছে। রেল সচিব ও উপদেষ্টার মৌখিক নির্দেশনা থাকলেও এখনো লিখিতভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণের আদেশ আসেনি। এটা প্রতারণার শামিল।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি মানা না হলে সারাদেশে রেল ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। তবুও কবরস্থান-মসজিদের জায়গায় স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না।’
বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলকে আলোচনায় ডেকে নেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি। রেলের মহাপরিচালক ও সচিবও পরিদর্শন করেছেন। কবরস্থান, মসজিদ ও মাজারের জায়গা অক্ষুণ্ন থাকবে। আগামীকাল (বুধবার) একটি কমিটি গিয়ে স্থানগুলো চিহ্নিত করবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রেলওয়ে কারিগরি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস কে বাড়ি, সিজিপিওয়াই সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক হোসেন শহীদ, সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম এবং রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান শিশির।
মন্তব্য করুন