ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে রসমালাই খেয়ে একই পরিবারের পাঁচজন অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। অভিযানে তেলাপোকা মেশানো মিষ্টি বিক্রির প্রমাণ মেলায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ও বেকারিটি সাময়িকভাবে সিলগালা করা হয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সিঙ্গারবিল বাজার এলাকায় যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রংধনু বেকারির রসমালাই খেয়ে একই পরিবারের পাঁচজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়ে বিষয়টি তদন্তে যৌথভাবে মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি অস্বাস্থ্যকর ও অপরিষ্কার পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করছিল। রান্নাঘর ও সংরক্ষণাগারে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল, খাবার রাখা ছিল খোলা অবস্থায়। সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল— মিষ্টির শিরায় মৃত তেলাপোকা ভেসে থাকতে দেখা যায়। এ শিরা পরবর্তীতে ভোক্তাদের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এছাড়া কর্মীদের কারও পরনে স্বাস্থ্যসম্মত পোশাক বা ড্রেস কোড ছিল না। এ অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, ভোক্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে। জনস্বার্থে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সিঙ্গারবিল বাজারের ‘রংধনু বেকারি অ্যান্ড সুইট হাট’ থেকে রসমালাই কিনে বাসায় আনেন। খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই পরিবারের সদস্যরা বমি ও পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠান।
অসুস্থরা হলেন— উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী শারমিন (২৭) ও তাদের দুই সন্তান আয়াত (৪) ও সাদী (১১), নাঈমের স্ত্রী জ্যোতি (৩৩) এবং তাদের মেয়ে ইয়ানা (৫)।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নাহিদ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছোট ভাই নাসিম রংধনু বেকারি থেকে রসমালাই কিনে এনেছিল। খাওয়ার পরপরই সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্ভবত মিষ্টিগুলো নষ্ট ছিল।’
মন্তব্য করুন