আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৩ এএম
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মাদ্রাসাছাত্র হত্যার রহস্য উন্মোচন

নিহত মাদ্রাসাছাত্র আমির হামজা। ছবি : সংগৃহীত
নিহত মাদ্রাসাছাত্র আমির হামজা। ছবি : সংগৃহীত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মাদ্রাসাছাত্র আমির হামজা ওরফে হানযালা (১৩) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। হত্যার মূলহোতা হিসেবে আটক করা হয়েছে একই মাদ্রাসার ছাত্র (১৬)। মাত্র ২০ টাকার বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আলফাডাঙ্গা থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আজম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এএসপি জানান, সোমবার (২০ অক্টোবর) নিহত হানযালার বাবা সায়েম উদ্দিন বিশ্বাস থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম। তদন্ত চলাকালেই মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে চান্দড়া মাদ্রাসার পাশে ডোবায় ভাসমান অবস্থায় একটি বস্তা দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বস্তাটি উদ্ধার করে খুললে ভেতরে পাওয়া যায় হানযালার অর্ধগলিত মরদেহ। বস্তার ভেতরে কয়েকটি ইটও ছিল।

এএসপি আজম খান বলেন, ঘটনার রাতে আমি মধুখালী থেকে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করি। পরে সকালে চারটি টিমে ভাগ হয়ে মাঠে নামি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ও হানযালা দুজনই চান্দড়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার ছাত্র। হানযালার কাছ থেকে অভিযুক্ত ৫০ টাকা ধার নেয়, যার মধ্যে ৩০ টাকা ফেরত দিলেও বাকি ২০ টাকার জন্য মনোমালিন্য হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই হত্যাকাণ্ড।

এএসপি বলেন,আসরের নামাজের পর অভিযুক্ত কিশোর হানযালাকে বলে—‘চলো, বাড়ি থেকে টাকা দিয়ে দিচ্ছি।’ এরপর তারা মাদ্রাসার পেছনের ধানক্ষেত হয়ে পাশের বাগানে যায়। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কিশোর ক্ষিপ্ত হয়ে হানযালার গলা চেপে ধরে। তখনই তার মৃত্যু হয়।

হত্যার পর কিশোর মাদ্রাসায় ফিরে এসে মাগরিবের নামাজ পড়ে, ক্লাস করে এবং রাতে স্বাভাবিক আচরণ করে। পরদিন ভোরে বাড়ি গিয়ে একটি বস্তা ও ইট নিয়ে আসে। হানযালার মরদেহ বস্তায় ভরে পাজামার ফিতা দিয়ে বস্তার মুখ বেঁধে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর মাদ্রায় গিয়ে গোসল করে এবং পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

এএসপি আজম খান আরও বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য কেউ এ ঘটনায় জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা আমিনুল্লাহ বলেন, দুজনই আমাদের মাদ্রাসার ছাত্র। এত অল্প বয়সে এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটবে, আমরা কেউ ভাবতেও পারিনি। পুরো মাদ্রাসায় এখন শোকের ছায়া।

নিহত হানযালার বাবা বাবা সায়েম বিশ্বাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার মাসুম বাচ্চাটা কী দোষ করল, যে ওকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল। আমার তিনটা মেয়ে, একটাই ছেলে ছিল হানযালা। আমি খুনিদের বিচার চাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ময়মনসিংহে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন

পালাতে গিয়ে মেরুদণ্ড ভাঙলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী

জনসংখ্যা বাড়াতে ইন্টারনেট-বিদ্যুৎ বন্ধ রাখবে যে দেশ

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান ও আত্মত্যাগ

বরিশালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন

মস্কোয় কেমন আছেন বাশার আল আসাদ

ভারতে ট্রাফিক আইন ভেঙে রাস্তায় নারী কনস্টেবলের নাচ

আইপিএল নিলামে মোস্তাফিজের দাম নিয়ে যা বললেন মাশরাফী

বিজয় দিবসে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ড্যাবের শ্রদ্ধাঞ্জলি

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি / প্রাথমিকের শতভাগ বই ছাপা শেষ

১০

আচরণবিধি ভঙ্গ করে নেতাকর্মীদের শোডাউন, বিএনপি প্রার্থীকে শোকজ

১১

প্রাণিপ্রেমী ‘রুহুল ভাই’-এর পাশে তারেক রহমান

১২

কক্সবাজারে শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধের গ্রাফিতি মুছে আলপনা, বিতর্ক

১৩

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের ট্যাগ নিয়ে চবির ১০১ শিক্ষকের বিবৃতি

১৪

টাকা দিয়ে নারীদের এনে জাপার বিজয় র‍্যালি, ভিডিও ভাইরাল 

১৫

উপকার হবে জানিয়ে ২০ দিন আগে হাদির অফিসে কবিরকে নিয়ে যান ফয়সাল

১৬

২৪ ঘণ্টায় আ.লীগের ২৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

১৭

আইপিএল নিলামে ‘অখ্যাত’ দুই তারকাকে কিনতে চেন্নাইয়ের রেকর্ড অর্থ খরচ

১৮

বিজয় দিবসে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা

১৯

থানা থেকে লুটের অস্ত্র মিলল ব্যোম রায়হানের বাসায়

২০
X