মারা যাওয়া শাবকটির পাশে দুদিন ধরেই দাঁড়িয়ে আছে মা হাতি। মানুষের উপস্থিতি পেলেই বিরক্ত হয়ে তেড়ে আসছে হাতিটি। মঙ্গল ও বুধবার (২২ অক্টোবর) দুদিন ধরে প্রচেষ্টা করেও হাতি শাবকের মৃতদেহ কাপ্তাই হ্রদ থেকে উদ্ধার করতে পারেনি বন বিভাগ। ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কাচালংমুখ বনশুল্ক ও পরীক্ষণ ফাঁড়ির আওতাধীন রাঙামাটির বরকল উপজেলার বরুনাছড়ি গ্রামের লিটনের টিলায় একটি হাতি শাবক মারা যায়। বন বিভাগ জানিয়েছে, খাড়া পাহাড় থেকে পা পিঁছলে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে পড়ে যায় হাতি শাবকটি। আহত অবস্থায় পরে হ্রদে ডুবেই মারা যায় সেটি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, মারা যাওয়া হাতিটি সেই শাবক; যেটি সম্প্রতিকালে ‘গোলাপি হাতি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। হাতি শাবকের বয়স ৮-১০ মাস হতে পারে বলছে বন বিভাগ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকেই বন বিভাগ বুনো হাতি শাবকটি উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে। কেননা মঙ্গলবার দিনভর কাপ্তাই হ্রদে ডুবে মারা যাওয়া হাতি শাবকটির পাশের টিলাতেই মা হাতি দাঁড়িয়ে ছিল। বুধবারও একইভাবে দাঁড়িয়ে ছিল মা হাতিটি। যে কারণে দুইদিনেও শাবকটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে উদ্ধার করা যায়নি।
তবে বুধবার পানিতে ভাসমান হাতি শাবকের মৃতদেহের অবস্থান স্থানান্তর হওয়ায় মায়ের অবস্থানও পাল্টেছে। বুধবার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হাতির মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে হয়েছে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিও।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, হাতি শাবক মৃত্যুর ঘটনায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভেটেরিনারি সার্জনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। ওই কমিটিসহ আমরা বুধবার আবারও ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমরা দেখতে পাই- মৃত হাতির বাচ্চাটা যেখানে ছিল সেখান থেকে সরিয়ে আরেকটা টিলার পাশে নিয়ে আসছে। মা হাতিটি ৮-১০ ফুটের মধ্যেই ওই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
ডিএফও আরও বলেন, যেহেতু মা হাতিটি সেখানে অবস্থান করছে, আমরা তাদের কাছাকাছি যেতে পারিনি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা যে টিম পাঠিয়েছেন তারাও নিশ্চিত হয়েছেন যে শাবকটি পড়ে গিয়েই হ্রদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে। যেহেতু হাতির বাচ্চার কাছে যাওয়া যাচ্ছে না; তাই পোস্টমর্টেম করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে । যদি হাতির পাল সেখান থেকে সরে যায় তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন