রাজশাহীর তানোরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবের এক মতবিনিময় সভায় প্রবেশ পথে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ও তার অনুসারী যুবদল নেতার দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন তিনি। এতে তিনি মারাত্মক আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তানোর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত এ সাংবাদিকের নাম লুৎফর রহমান (৪০)। তিনি দৈনিক কালবেলা ও সোনার দেশ পত্রিকার তানোর উপজেলা প্রতিনিধি।
অভিযুক্ত বিএনপির বাহিষ্কৃত ওই নেতার নাম মিজানুর রহমান মিজান। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য ও তানোর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপর অভিযুক্তরা হলেন— তানোর সদরের বাসিন্দা ও তানোর পৌর বিএনপির সদস্য ইয়াসিন ঠিকাদার এবং গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলামের ছেলে ও রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম কুসুম।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঞার সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। তিনি আগে এ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছিলেন। তিনদিনের জন্য সরকারি সফরে রাজশাহীতে আসেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তানোর মাদরাসাতুল ইসলাহিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তানোর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। ওই সভাস্থলের সামনে হামলার শিকার হন সাংবাদিক লুৎফর রহমান।
আহত সাংবাদিক লুৎফর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য তানোর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষের সামনে উপস্থিত হই। এ সময় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজান পূর্ব শত্রুতার জেরে আমাকে হুমকি ও ধাক্কা দেয়। পরে তার অনুসারী রবিউল ইসলাম কুসুম ও ইয়াসিন ঠিকাদার আমাকে কিলঘুষি মেরে বেধড়ক পেটায়। সেখানে প্রায় ১০ মিনিট ধরে তারা আমার ওপর নির্যাতন করে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিজানকে ফোন করা হলে, এমন ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না, বলতেও পারবেন না বলে এড়িয়ে গেছেন।
অপর অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম কুসুম ও ইয়াসিন ঠিকাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাদের ফোন রিসিভ হয়নি।
এ নিয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় তানোর বিএনপি দলের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপাক সমালোচনা হচ্ছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ড যারা করছেন, দলে তাদের কোনো জায়গা নেই।
এ ব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ঘটনাটি মোবাইলে সাংবাদিক লুৎফর রহমান অবগত করেছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন