

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও রংপুর-২ আসনের দলের প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, আমরা সব সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাবি করে আসছি কিন্তু এখনো প্রশাসনের অনেকে বিশেষ একটা দলের পক্ষে কাজ করছেন। সরকারি চাকরি যারা করেন তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, এটা অব্যাহত থাকলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা সাহাপুর মাঠে দাঁড়িপাল্লার সমর্থনে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো সবাই স্বাক্ষর করেছি, গণভোটের ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। আমাদের বিশ্বাস, গণভোট হলে দেশের অনেক সমস্যারই সমাধান হবে। প্রশ্ন হলো, যেহেতু আমরা সবাই গণভোটে রাজি হয়েছি, তাহলে এটি জাতীয় নির্বাচনের আগেই করা যাবে না কেন? আগেই করলে সমস্যাটা কোথায়?
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি পরিষ্কার এবং এখনো এই দাবি আমরা করছি— জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করতে হবে।
এটিএম আজহার বলেন, যেহেতু দুর্নীতিমুক্তভাবেই এতদিন কাজ করেছি, নির্বাচিত হলেও একইভাবে দুর্নীতিমুক্ত থাকব। আমি বারবারই বলেছি, এমপি হতে পারলে সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দ আনব, এলাকার উন্নয়ন করব। ক্ষমতায় গেলে সরকারি বরাদ্দের একটি টাকাও হারামভাবে আমার পেটে ঢুকবে না— এটা আমি অঙ্গীকার করছি। ভোটে আমার বিজয় এমন হবে যে, আমার ধারের কাছেও কেউ আসতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচিত হলে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, জনগণ আমাকে বিশ্বাস করলে প্রথমেই রাস্তাঘাট নির্মাণে অগ্রাধিকার দেব। বহু সড়ক এখনো অসম্পূর্ণ— এগুলো সম্পর্কে প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েছি, কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। নির্বাচিত হলে দ্রুত এসব সড়কের কাজ সম্পন্ন করব। পাশাপাশি যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো বৈষম্যের শিকার এবং এমপিওভুক্ত হয়নি, সেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের চেষ্টা করব।
বন্ধ থাকা শ্যামপুর সুগার মিল চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে একটি সুগার মিল আছে, যা শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী থাকাকালে উন্নয়ন হয়েছিল। পরে তার দায়িত্ব শেষ হলে দুর্নীতির জালে জড়িয়ে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাচিত হলে, আইনি জটিলতা না থাকলে, মিলটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেব, যাতে এলাকার শত শত মানুষ চাকরির সুযোগ পায়।
স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন নিয়ে তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও এখানে অধিকাংশ রোগীই দরিদ্র। তাই নির্বাচিত হলে বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ দুই উপজেলাতেই হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হবে। রোগীরা যেন যথাযথ সেবা পায় তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুলভ মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, সাড়ে তিন চার মাস ধরে বদরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। সব জায়গায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমি সর্বস্তরের লোকদের সমর্থন পাচ্ছি। যেহেতু তরুণ প্রজন্ম একটা বিপ্লব করে সরকারকে হঠিয়েছে, এখানে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ অনেকটা বেশি। তরুণ, যুব, বৃদ্ধ, মহিলা এবং অমুসলিমদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি ভোটে। ভোটের পরিবেশ অত্যন্ত অনুকূলে।
এদিন প্রায় চার হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রাটি বদরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুর মাঠ থেকে শুরু হয়ে শ্যামপুর, নাগেরহাট, কুতুবপুর, লোহানীপাড়া, কালুপাড়া ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন প্রদক্ষিণ শেষে আবারও সাহাপুর মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন