

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘৫৪ বছর পর চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে এবারের বিজয় দিবসটি নতুন উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাস নিয়ে পালনের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির তৎপরতার মধ্যেই এই বিজয় উৎসব পালন করতে হচ্ছে। এর পরও দেশের মানুষ বিজয়ের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি কখনোই জনগণের অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না।’
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বোঝা যায়, বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃত অর্থেই বিজয় উদযাপনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তরুণ প্রজন্ম যেভাবে ৭১-এর ঘাতক ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তা আশার আলো জাগায়।’
তিনি বলেন, ‘এবারের বিজয় দিবসের প্রধান অঙ্গীকার হওয়া উচিত ৭১-এর ঘাতকদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র ও সংবিধানের মূলনীতির কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার সময় যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, দীর্ঘ ৫৪ বছরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র—এই মৌল নীতিগুলো বারবার উপেক্ষিত হয়েছে।’
নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিপিবির সাবেক এ নেতা বলেন, ‘সেই আদর্শের পথে ফেরার অন্যতম শর্ত হচ্ছে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন। তবে তিনি অভিযোগ করেন, এই নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে বিভিন্ন মহল সক্রিয়ভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।’
মহান বিজয় দিবসে তিনি সরকার, নির্বাচন কমিশন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান—মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ যেন কোনোভাবেই পথ হারিয়ে না ফেলে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে নব্বই ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে আগামী ফেব্রুয়ারিতে সময়মতো একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই আমরা একদিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে রুখে দিতে পারব, অন্যদিকে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যেতে পারব।’
এ সময় তার সঙ্গে সিপিবির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন