

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আজকে ৫০-এর অধিক বছর পার হয়েছে। এরমধ্যে অনেক চড়াই-উতরাই বাধা-বিপত্তি, অনেক কিছু আমরা দেখেছি। গণতন্ত্র বারবার হুমকির মুখে পড়েছিল, হায়েনারা ছোবল মেরেছিল। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা বারবার যুদ্ধ করেছি, লড়াই-সংগ্রাম করেছি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য জিয়াউর রহমান দেশের নেতৃত্বে বসেছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় তিনি জাগোদল ও বিএনপি সৃষ্টি করেছিলেন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর শহরের ঝুমুর এলাকার বিজয় স্মৃতি স্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো শেষে জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন তিনি।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়া বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরে তার শাহাদাত বরণের পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপসহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশের হাল ধরেছিলেন। পরপর তিনবার তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। জিয়া ছিলেন জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি ও খালেদা জিয়া ছিলেন জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের আগে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস ছিল। মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশ স্বাধীন করার সংগ্রামে-লড়াইয়ে অবতরণ হয়েছিলেন, বাংলাদেশের শিক্ষক, বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ, বুদ্ধিজীবী ছিলেন, তাদের গণহত্যা করেছিল আলবদর রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকহানাদার বাহিনীর নেতৃত্বে। যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত ছিল, স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ও সাধারণ ক্ষমা পেয়েছিল। কিন্তু ওই সাধারণ ক্ষমাকে তারা সম্মান দিতে জানেনি, অবমূল্যায়ন করেছিল। কখনো সেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টের সঙ্গে ও কখনো আওয়ামীবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশের জন্য যে লড়াই করা, দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তারা নিজেদেরকে সেভাবে দৃশ্যমান ও বাস্তবে জনগণের সামনে জনগণের প্রয়োজনে এবং দেশের প্রয়োজনে তুলে ধরতে পারেননি। কখনো এগিয়ে আসেনি তারা।
বিএনপির এ নেতা বলেন, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান যদি সেইদিন ঐতিহাসিক ঘোষণা না দিতেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের যদি নেতৃত্ব না দিতেন, রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশ আজকে পর্যন্ত হয়তোবা প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যেত। এ যে ঐতিহাসিক ঘোষণা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, একজন সৈনিক তিনি সে সময়ে তরুণ বয়সে দেশের আপামর জনসাধারণের পক্ষে পাকহানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে যে ঘোষণা দিয়েছেন, আজকে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করছি।
এ্যানি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সী নারী। তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে বন্দি হয়েছিলেন। তিনিও ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আজকে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। জিয়া পরিবার দেশের জন্য ছিলেন। দেশের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন এবং জীবনটাকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, বাফুফে সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, পৌর বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম লিটন, সেক্রেটারি মো. নিজাম উদ্দিন, সদর উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. এমরানসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী।
মন্তব্য করুন