

চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের আলোচিত নাম সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে পাওয়া সব মামলার জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও আপাতত সেই সুবিধা আর ভোগ করতে পারবেন না তিনি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের এক আদেশে ছোট সাজ্জাদের জামিন স্থগিত করা হয়। আদালতের এই আদেশের পর হাইকোর্ট থেকে পাওয়া জামিন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, ছোট সাজ্জাদ ১০টি হত্যাসহ মোট ১৯টি মামলার আসামি। তার স্ত্রী শারিমন তামান্নার বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যা মামলাসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে ৪টি হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে স্বামী-স্ত্রী দুজনই জামিন পান। তবে সেই আদেশ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে চট্টগ্রামের আদালতে পৌঁছায়। বর্তমানে সাজ্জাদের স্ত্রী শারিমন তামান্না ফেনী কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিংমল থেকে সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছুড়ে’ সাজ্জাদকে জামিনে মুক্ত করার কথা উল্লেখ করে তার স্ত্রী তামান্নার একটি ভিডিও বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আলোচনার জন্ম দিলে পরবর্তীতে তামান্নাকেও গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মহল ঘটনাপ্রবাহকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ছোট সাজ্জাদ কারাগারে থাকলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা থেমে নেই বলে দাবি পুলিশের। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বাহিনীর অন্তত অর্ধশত সদস্য হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সাজ্জাদের অনুপস্থিতিতে মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেন ইমন, বোরহান উদ্দিন কাদের ও নাজিম বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে একটি গলিতে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই নিহত হন সরোয়ার হোসেন বাবলা নামের এক সন্ত্রাসী, যার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সরোয়ারকে গুলি করা হয়। তবে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানো শুটারকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সর্বশেষ গত রোববার নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুলগাঁও এলাকায় সাবেক ছাত্রদল নেতা আহমদ রেজার বাসার সামনে ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের দাবি, এক প্রতিবেশীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির প্রতিবাদ করায় এই গুলির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদের সহযোগীরা এতে জড়িত। ছোট সাজ্জাদ এই বড় সাজ্জাদেরই অনুসারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন