চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙা ইউনিয়নের যাদুপুর গ্রামে গেল তিন দিনে একে একে ১১টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে অন্তত ৩০টির অধিক গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে এতগুলো গরু মারা গেলেও কী কারণে মৃত্যু, সে বিষয়ে সঠিক কোনো ধারণা নেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের।
তবে খামারিরা বলছেন, কয়েক দিন আগে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের গরু ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়ে যান পশু চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। সেই ভ্যাকসিন দেওয়ায় কাল হয়েছে বলছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর ওই গ্রামে গিয়ে কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা হয়। তাদেরই একজন মাহবুব আলম। তার দুটি ভ্যাকসিন দেওয়ার পর দিন সোমবার দুপুরের পর মারা গেছে। এ খামারির ধারণা ভ্যাকসিনেই কোনো সমস্যা ছিল, এর কারণেই তার গরুর মৃত্যু হয়েছেন।
আরেক খামারি রেখা বেগম জানান, তিনি অনেক কষ্টে একটি ষাড় গরু লালন পালন করছিলেন। বিক্রি করে সংসারে উন্নতি করার আশা ছিল, কিন্তু সবই শেষ হয়ে গেছে। গরুটি হঠাৎ করে মারা যায়। পরে জানতে পারি গ্রামের আরও অনেকের গরুই মারা গেছে। কী কারণে মারা গেল কিছু বুঝতে পারছি না। এখন সবাই বলাবলি করছে সেদিন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে যে ভ্যাকসিন দিতে এসেছিল, সে আসলে পশু ডাক্তারই লয়, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা কামিয়ে চলে গেছে। এদিকে গরু মরে গেল, এখন আমরা কার কাছে বিচার দিব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার সকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গরু ছাগলকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজটি করেছিলেন মাইনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি একসময় জেলা প্রাণিসম্পদের উপসহকারী নাইমুল হকের সহযোগী হিসাবে কাজ করতেন। তবে এ ঘটনার পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদশন করে খামারিদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেই সঙ্গে কি কারণে গরুগুলো মারা গেল, সে বিষয়টি তদন্ত করতে আমাদের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি কমিটিও করা হয়েছে। জয়পুরহাট আঞ্চলিক রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তারা মৃত গরুর ময়নাতদন্ত ও নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। ওই এলাকায় যে সকল গরু এখন অসুস্থ সেগুলোর চিকিৎসায় আমাদের টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
মন্তব্য করুন